এ আয়াত দু’টিতে নবী (সা.) কে সম্বোধন করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু তিনি যাদের সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে নিন্দাবাদ উচ্চারণ করা হচ্ছে। আর এ নিন্দাবাদের উদ্দেশ্য নিছক নিন্দাবাদ নয় বরং বিদ্রুপবানে বিদ্ধ করে তাদের সুপ্ত মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তোলা এবং চোখ ও কানের মাধ্যমে তাদের মনের ভেতরে প্রবেশ করার পথ খুলে দেয়াই এর উদ্দেশ্য এভাবে যুক্তিসঙ্গত কথা ও সমবেদনা পূর্ণ উপদেশ সেখানে পৌঁছবে পারবে। এ বর্ণনা পদ্ধতিটি কিছুটা এমনি ধরনের যেমন কোন সৎ লোক অসৎ লোকদের মাঝে উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী সহকারে বাস করতে থাকে এবং অত্যন্ত আন্তরিকতা ও দরদ সহকারে তারা যে পতনশীল অবস্থার মধ্যে পড়ে আছে সে সম্পর্ক তাদের মনে অনুভূতি জাগাতে থাকে। তাদের জীবনযাপন প্রণালীতে কি কি গলদ আছে এবং সঠিক জীবনযাপন প্রণালী কি তা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ও যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে সে তাদেরকে বুঝাবার চেষ্টা করছে। কিন্তু তার পূত-পবিত্র জীবন থেকে কেউ এ শিক্ষা নিচ্ছে না এবং তার এ শুভাকাংখামূলক উপদেশকেও কেউ গ্রাহ্য করছে না। এ অবস্থায় যখন সে তাদেরকে বুঝাবার কাজে ব্যস্ত রয়েছে এবং তারা তার কথাগুলোর প্রতি কর্ণপাত করছে না ঠিক এমন সময় তার কোন বন্ধু এসে তাকে তাকে বলে, আরে ভাই এ তুমি কি করছো? তুমি এমন লোকদের শুনাচ্ছো যারা কানে শুনে না এবং এমন লোকদের পথ দেখাচ্ছো যারা চোখ দেখে না। এদের মনের কানে তালা লেগেছে এবং এদের হৃদয়ের চোখ কানা হয়ে গেছে। এ সৎ লোককে তার সংস্কার প্রচেষ্টা থেকে বিরত রাখা তার বন্ধুর একথা বলার উদ্দেশ্য নয়। বরং তার উদ্দেশ্য হল, হয়তো এ বিদ্রূপ ও তিরস্কারের ফলে অচেতন লোকদের কিছুটা চেতন ফিরে আসবে।