أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِى تَضْلِيلٍۢ
তিনি কি তাদের কৌশল ৩ ব্যর্থ করে দেননি? ৪
৩
মূলে কাইদা (كيد) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কোন ব্যক্তিকে ক্ষতি করবার জন্য গোপন কৌশল অর্থে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে গোপন কি ছিল? ষাট হাজার লোকের একটি সেনাবাহিনী কয়েকটি হাতি নিয়ে প্রকাশ্যে ইয়ামন থেকে মক্কায় আসে। তারা যে কা’বা শরীফ ভেঙ্গে ফেলতে এসেছে, একথাও তারা গোপন করেনি। কাজেই এ কৌশলটি গোপন ছিল না। তবে হাবশীরা কা’বা ভেঙ্গে ফেলে কুরাইশদেরকে বিধ্বস্ত করে এবং এভাবে সমগ্র আরববাসীদেরকে ভীত ও সন্ত্রস্ত করে দক্ষিণ আরব থেকে সিরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত বাণিজ্য পথ আরবদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইছিল। এটা ছিল তাদের মক্কা আক্রমণের উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্যটিকে তারা গোপন করে রাখে। অন্যদিকে তারা প্রকাশ করতে থাকে কয়েকজন আরব তাদের গীর্জার যে অবমাননা করেছে, কা’বা শরীফ ভেঙে ফেলে তার প্রতিশোধ নিতে চায়।
৪
মূলে বলা হয়েছে فِي تَضْلِيلٍ অর্থাৎ তাদের কৌশলকে তিনি ভ্রষ্টতার মধ্যে নিক্ষেপ করেছেন। কিন্তু প্রচলিত প্রবাদ অনুযায়ী কৌশলকে ভ্রষ্টতার মধ্যে নিক্ষেপ করার মানে হয় তাকে নষ্ট ও বিধ্বস্ত করে দেয়া অথবা নিজের উদ্দেশ্য অর্জনের ক্ষেত্রে তাকে ব্যর্থ করে দেয়া। যেমন আমরা বলি, অমুক ব্যক্তির তীর লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়েছে, তার সব প্রচেষ্টা ও কলাকৌশল ব্যর্থ হয়েছে। কুরআন মজীদের এক জায়গায় বলা হয়েছে
وَمَا كَيْدُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ “কিন্তু কাফেরদের কলাকৌশল ব্যর্থ হয়েছে। (আল মু’মিন ২৫) অন্য জায়গায় বলা হয়েছেঃ
وَأَنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي كَيْدَ الْخَائِنِينَ “আর আল্লাহ খেয়ানতকারীদের কৌশলকে সফলতার দ্বারে পৌঁছিয়ে দেন না।” (ইউসূফ ৫২) আরববাসীরা ইমরাউল কায়েসকে
اَلْمَلِكُ الضَّلِيْلْ “বিনষ্টকারী বাদশাহ” বলতো। কারণ সে তার বাপের কাছ থেকে পাওয়া বাদশাহী হারিয়ে ফেলেছিল।