ٱلَّذِىٓ أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍۢ وَءَامَنَهُم مِّنْ خَوْفٍۭ
যিনি তাদেরকে ক্ষুধা থেকে রেহাই দিয়ে খাবার দিয়েছেন ৪ এবং ভীতি থেকে নিরাপত্তা দান করেছেন। ৫
৪
মক্কায় আসার পূর্বে কুরাইশরা যখন আরবের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল তখন তারা অনাহারে মরতে বসেছিল। এখানে আসার পর তাদের জন্য রিযিকের দরজাগুলো খুলে যেতে থাকে। তাদের সপক্ষে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এই বলে দোয়া করেছিলেন--- “হে আল্লাহ! আমি তোমার মর্যাদাশালী ঘরের কাছে একটি পানি ও শস্যহীন উপত্যকায় আমার সন্তানদের একটি অংশের বসতি স্থাপন করিয়েছি, যাতে তারা নামায কায়েম করতে পারে। কাজেই তুমি লোকদের হৃদয়কে তাদের অনুরাগী করে দিয়ো, তাদের খাবার জন্য ফলমূল দান করো।” (সূরা ইবরাহীম ৩৭) তাঁর এই দোয়া অক্ষরে অক্ষরে পূর্ণ হয়।
৫
অর্থাৎ যে ভীতি থেকে আরব দেশে কেউ নিরাপদ নয়, তা থেকে তারা নিরাপদ রয়েছে। সে যুগে আরবের অবস্থা এমন ছিল যে, সারা দেশে এমন কোন জনপদ ছিল না যেখানে লোকেরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারতো। কারণ সবসময় তারা আশঙ্কা করতো, এই বুঝি কোন লুটেরা দল রাতের অন্ধকরে হঠাৎ তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং তাদের সবকিছু লুট করে নিয়ে গেলো। নিজের গোত্রের সীমানার বাইরে পা রাখার সাহস কোন ব্যক্তির ছিল না। কারণ একাকী কোন ব্যক্তির জীবিত ফিরে আসা অথবা গ্রেফতার হয়ে গোলামে পরিণত হবার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যেন অসম্ভব ব্যাপার ছিল। কোন কাফেলা নিশ্চিন্তে সফর করতে পারতো না। কারণ পথে বিভিন্ন স্থানে তাদের ওপর ছিল দস্যু দলের আক্রমণের ভয়। ফলে পথ-পার্শ্বের প্রভাবশালী গোত্র সরদারদেরকে ঘুষ দিয়ে বাণিজ্য কাফেলাগুলো দস্যু ও লূটেরাদের হাত থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ রেখে এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু কুরাইশরা মক্কায় সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিল। তাদের নিজেদের ওপর কোন শত্রুর আক্রমণের ভয় ছিল না। তাদের ছোট বড় সব রকমের কাফেলা দেশের প্রত্যেক এলাকায় যাওয়া আসা করতো। হারাম শরীফের খাদেমদের কাফেলা, একথা জানার পর কেউ তাদের ওপর আক্রমণ করার সাহস করতো না। এমন কি একজন কুরাইশী একাই যদি কখনো কোন জায়গায় যেতো এবং সেখানে কেউ তার ক্ষতি করতে যেতো তাহলে তার পক্ষে শুধুমাত্র হারমী اَنَا مِنْ حَرَمِ اللهِ বা
(حرمى)
আমি হারম শরীফের লোক বলে দেয়াই যথেষ্ট ছিল। একথা শুনার সাথেই আক্রমণকারীর হাত নিচের দিকে নেমে আসতো।