أَفَمَن كَانَ عَلَىٰ بَيِّنَةٍۢ مِّن رَّبِّهِۦ وَيَتْلُوهُ شَاهِدٌۭ مِّنْهُ وَمِن قَبْلِهِۦ كِتَـٰبُ مُوسَىٰٓ إِمَامًۭا وَرَحْمَةً ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ يُؤْمِنُونَ بِهِۦ ۚ وَمَن يَكْفُرْ بِهِۦ مِنَ ٱلْأَحْزَابِ فَٱلنَّارُ مَوْعِدُهُۥ ۚ فَلَا تَكُ فِى مِرْيَةٍۢ مِّنْهُ ۚ إِنَّهُ ٱلْحَقُّ مِن رَّبِّكَ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يُؤْمِنُونَ
তারপর যে ব্যক্তি তার রবের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট সাক্ষ্যের অধিকারী ছিল, ১৭ এরপর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে একজন সাক্ষীও (এ সাক্ষ্যের সমর্থনে) এসে গেছে ১৮ এবং পথপ্রদর্শক ও অনুগ্রহ হিসেবে পূর্বে আগত মূসার কিতাবও বর্তমান ছিল (এ অবস্থায় সে ব্যক্তিও কি দুনিয়া পূজারীদের মতো তা অস্বীকার করতে পারে?) এ ধরনের লোকেরা তো তার প্রতি ঈমান আনবেই, ১৯ আর মানব গোষ্ঠীর মধ্য থেকে যে-ই একে অস্বীকার করে তার জন্য যে জায়গার ওয়াদা করা হয়েছে তা হচ্ছে দোযখ। কাজেই হে নবী! তুমি এ জিনিসের ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহে পড়ে যেয়ো না, এতো তোমার রবের পক্ষ থেকে পাঠানো সত্য। তবে বেশীর ভাগ লোক তা স্বীকার করে না।
১৭
অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজেই নিজের অস্তিত্ব, পৃথিবী ও আকাশের নির্মাণ এবং বিশ্ব-জাহানের শাসন-শৃংখলা বিধানের ক্ষেত্রে এ বিষয়ের সুস্পষ্ট সাক্ষ্য লাভ করছিল যে, একমাত্র আল্লাহই এ দুনিয়ার স্রষ্টা, মালিক ও প্রতিপালক এবং এ সাক্ষ্য দেখে যার মনে আগে থেকেই বিশ্বাস জন্মাচ্ছিল যে, এ জীবনের পরে আরো কোন জীবন অবশ্যি হওয়া উচিত যেখানে মানুষ আল্লাহর কাছে তার কাজের হিসাব দেবে এবং নিজের কৃতকর্মের জন্য পুরস্কার ও শাস্তি লাভ করবে।
১৮
অর্থাৎ কুরআন এসে এ প্রকৃতিগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সাক্ষ্যের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করলো এবং তাকে জানালো তুমি বিশ্ব প্রকৃতিতে ও জীবন ক্ষেত্রে যার নিদর্শন ও পূর্বাভাস পেয়েছো প্রকৃতপক্ষে তাই সত্য।
১৯
বক্তব্যের যে প্রাসঙ্গিক ধারাবাহিকতা চলে এসেছে তার প্রেক্ষিতে এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে, যারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিকগুলো এবং তার আপাত চাকচিক্যে মুগ্ধ হয়ে গেছে তাদের জন্য কুরআনের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করা সহজ। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের অস্তিত্ব ও বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থাপনায় আগে থেকেই তাওহীদ ও আখেরাতের স্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পেয়ে আসছিল তারপর কুরআন এসে ঠিক সেই একই কথা বললো, যার সাক্ষ্য সে ইতিপূর্বে নিজের মধ্যে এবং বাইরেও পাচ্ছিল আর কুরআনের পূর্বে আগত আসমানী কিতাব থেকেও এর পক্ষে বক্তব্যের যে প্রাসঙ্গিক ধারাবাহিকতা চলে এসেছে তার প্রেক্ষিতে এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে, যারা দুনিয়ার জীবনের বাহ্যিক দিকগুলো এবং তার আপাত চাকচিক্যে মুগ্ধ হয়ে গেছে তাদের জন্য কুরআনের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করা সহজ। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের অস্তিত্ব ও বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থাপনায় আগে থেকেই তাওহীদ ও আখেরাতের স্পষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পেয়ে আসছিল তারপর কুরআন এসে ঠিক সেই একই কথা বললো, যার সাক্ষ্য সে ইতিপূর্বে নিজের মধ্যে এবং বাইরেও পাচ্ছিল আর কুরআনের পূর্বে আগত আসমানী কিতাব থেকেও এর পক্ষে আরো সমর্থন পাওয়া গেলো, সে কেমন করে এসব শক্তিশালী সাক্ষ্য-প্রমাণের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে এ অস্বীকারকারীদের সুরে সুর মিলাতে পারে? এ উক্তি থেকে একথা পরিষ্কার জানা যায় যে, নবী ﷺ কুরআন নাযিলের পূর্বেই ঈমান বিল গাইব-এর মনজিল অতিক্রম করেছিলেন। সূরা আন’আম যেমন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তিনি নবী হবার আগেই বিশ্ব-জগতের নিদর্শনসমূহ প্রত্যক্ষ করে তাওহীদের তত্ত্বজ্ঞান লাভ করেছিলেন, ঠিক তেমনি এ আয়াত পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে এ সত্যে উপনীত হয়েছিলেন। আর এরপর কুরআন এসে কেবল এর সত্যতা প্রমাণ এবং একে সুদৃঢ়ই করেনি বরং তাঁকে সরাসরি সত্যের প্রত্যক্ষ জ্ঞানও দান করেছে।