إِلَـٰهِ ٱلنَّاسِ
মানুষের প্রকৃত মাবুদের কাছে, ১
১
এখানেও সূরা আল ফালাকের মতো ‘আউযু বিল্লাহ’ বলে সরাসরি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করার পরিবর্তে আল্লাহর তিনটি গুণের মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করে তাঁর আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এ তিনটি গুণের মধ্যে একটি হচ্ছে, তাঁর রাব্বুন নাস অর্থাৎ সমগ্র মানবজাতির প্রতিপালক, মালিক ও প্রভু হওয়া। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, তাঁর মালিকুন নাস অর্থাৎ সমস্ত মানুষের বাদশাহ, শাসক ও পরিচালক হওয়া। তৃতীয়টি হচ্ছে, তাঁর ইলাহুন নাস অর্থাৎ সমগ্র মানবজাতির প্রকৃত মাবুদ হওয়া। (এখানে একথা সুস্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন যে, ইলাহ শব্দটি কুরআন মজীদে দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এক, এমন বস্তু বা ব্যক্তি যার ইবাদাত গ্রহণ করার কোন অধিকারই নেই কিন্তু কার্যত তার ইবাদাত করা হচ্ছে। দুই, যার ইবাদাত গ্রহণ করার অধিকার আছে এবং যিনি প্রকৃত মাবুদ, লোকেরা তার ইবাদাত করুক বা না করুক। আল্লাহর জন্য যেখানে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে এ দ্বিতীয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে)।
এ তিনটি গুণের কাছে আশ্রয় চাওয়ার মানে হচ্ছেঃ আমি এমন এক আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি, যিনি সমস্ত মানুষের রব, বাদশাহ ও মা’বুদ হবার কারণে তাদের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব রাখেন, যিনি নিজের বান্দাদের হেফাজত করার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন এবং যথার্থই এমন অনিষ্টের হাত থেকে মানুষের রক্ষা করতে পারেন, যার হাত থেকে নিজে বাঁচার এবং অন্যদের বাঁচাবার জন্য আমি তাঁর শরণাপন্ন হচ্ছি। শুধু এতটুকুই নয় বরং যেহেতু তিনিই রব, বাদশাহ ও ইলাহ, তিনি ছাড়া আর কেউ নেই যার কাছে আমি পানাহ চাইতে পারি এবং প্রকৃতপক্ষে যিনি পানাহ দেবার ক্ষমতা রাখেন।