اَنَسْتُمْ (আ-নাসতুম) মানে اَحْسَسْتُمْ (আহসাসতুম) বা رَايْتُمْ (রাআইতুম)। কাজেই আরবী ভাষার প্রচলিত রীতি অনুযায়ী ‘নাস’ শব্দটির মানে জিন হতে পারে না।
তাই এখানে আয়াতটির সঠিক মানে হচ্ছে, “এমন প্ররোচনা দানকারীর অনিষ্ট থেকে যে মানুষের মনে প্ররোচনা দান করে সে জিনদের মধ্য থেকে হোক বা মানুষদের মধ্য থেকে।” অর্থাৎ অন্য কথায় বলা যায়, প্ররোচনা দান করার কাজ জিন শয়তানরাও করে আবার মানুষ শয়তানরাও করে। কাজেই এ সূরায় উভয়ের অনিষ্ট থেকে পানাহ চাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কুরআন থেকে এ অর্থের সমর্থন পাওয়া যায় এবং হাদীস থেকেও। কুরআনে বলা হয়েছেঃ
وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الْإِنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُورًا
“আর এভাবে আমি জিন শয়তান ও মানুষ শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবীর শত্রু বানিয়ে দিয়েছি, তারা পরস্পরের কাছে মনোমুগ্ধকর কথা ধোঁকা ও প্রতারণার ছলে বলতে থাকে।” (আল আন’আম, ১১২)
আর হাদীসে ইমাম আহমাদ, নাসাঈ ও ইবনে হিব্বান, হযরত আবু যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হলাম। তখন তিনি মসজিদে বসেছিলেন। তিনি বললেন, আবু যার! তুমি নামায পড়েছো? আমি জবাব দিলাম, না। বললেন, ওঠো এবং নামায পড়ো! কাজেই আমি নামায পড়লাম এবং তারপর আবার এসে বসলাম। তিনি বললেনঃ
يَا أبَا ذَرٍّ نَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ شَرِّ شَيَاطِينِ الإِنْسِ وَالْجِنِّ-
“হে আবু যার! মানুষ শয়তান ও জিন শয়তানের অনিষ্ট থেকে আল্লাহর পানাহ চাও!” আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! মানুষের মধ্যেও কি আবার শয়তান হয়? বললেন, হ্যাঁ।