وَدَخَلَ مَعَهُ ٱلسِّجْنَ فَتَيَانِ ۖ قَالَ أَحَدُهُمَآ إِنِّىٓ أَرَىٰنِىٓ أَعْصِرُ خَمْرًۭا ۖ وَقَالَ ٱلْـَٔاخَرُ إِنِّىٓ أَرَىٰنِىٓ أَحْمِلُ فَوْقَ رَأْسِى خُبْزًۭا تَأْكُلُ ٱلطَّيْرُ مِنْهُ ۖ نَبِّئْنَا بِتَأْوِيلِهِۦٓ ۖ إِنَّا نَرَىٰكَ مِنَ ٱلْمُحْسِنِينَ
কারাগারে ৩১ তার সাথে আরো দু’টি ভৃত্যও প্রবেশ করলো। ৩২ একদিন তাদের একজন তাঁকে বললো, “আমি স্বপ্নে দেখেছি আমি মদ তৈরী করছি।” অন্যজন বললো, “আমি দেখলাম আমার মাথায় রুটি রাখা আছে এবং পাখিরা তা খাচ্ছে।” তারা উভয়ে বললো, “আমাদের এর তা’বীর বলে দিন। আমরা আপনাকে সৎকর্মশীল হিসেবে পেয়েছি।” ৩৩
৩১
হযরত ইউসুফকে যখন কারাগারে পাঠানো হয়েছিল তখন সম্ভবত তাঁর বয়স বিশ একুশ বছরের বেশী ছিল না। তালমূদে বলা হয়েছে, কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে যখন তিনি মিসরের শাসনকর্তা হন তখন তাঁর বয়স ছিল তিরিশ বছর। এদিকে কুরআন বলছে, কারাগারে তিনি بِضْعَ سِنِينَ অর্থাৎ কয়েক বছর কাটান। بِضْعَ শব্দটি আরবী ভাষায় ১০ পর্যন্ত সংখ্যার জন্য বলা হয়ে থাকে।
৩২
হযরত ইউসুফের সাথে এই যে দু’জন গোলাম কারাগারে প্রবেশ করেছিল তাদের সম্পর্কে বাইবেলের বর্ণনা হচ্ছে, তাদের একজন ছিল মিসরের বাদশাহর মদ পরিবেশকদের সরদার এবং দ্বিতীয়জন রাজকীয় রুটি প্রস্তুকারকদের অফিসার। তালমূদের বর্ণনা মতে, মিসরের বাদশাহ তাদের এ অপরাধে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন যে, একবার এক দাওয়াতের মজলিসে পরিবেশিত রুটি একটু বিস্বাদ লেগেছিল এবং একটি মদের পাত্রে পাওয়া গিয়েছিল মাছি।
৩৩
কারাগারে হযরত ইউসুফকে কোন্ দৃষ্টিতে দেখা হতো এ থেকে তা আন্দাজ করা যেতে পারে। ওপরে যেসব ঘটনার কথা আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো সামনে রাখলে ব্যাপারটা আর মোটেই বিস্ময়কর মনে হয় না যে, এ কয়েদী দু’জন হযরত ইউসুফের কাছেই-বা এসে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলো কেন এবং তাঁকে “আমরা আপনাকে সদাচারী হিসেবে পেয়েছি” বলে শ্রদ্ধার্ঘ পেশ করলো কেন। জেলখানার ভেতরে বাইরে সবাই জানতো, এ ব্যক্তি কোন অপরাধী নয়, বরং একজন হুকুম মেনে চলার প্রমাণ পেশ করেছেন। আজ সারাদেশে তাঁর চেয়ে বেশী সৎব্যক্তি আর কেউ নেই। এমনকি দেশের ধর্মীয় নেতাদের মধ্যেও তাঁর মতো লোক একজনও নেই। এ কারণে শুধু কয়েদীরাই তাঁকে ভক্তি ও শ্রদ্ধার চোখে দেখতো না বরং কয়েদখানার পরিচালকবৃন্দ এবং কর্মচারীরাও তাঁর ভক্তদলে শামিল হয়ে গিয়েছিল। বাইবেলে বলা হয়েছেঃ “কারা রক্ষক কারাস্থিত সমস্ত বন্দির ভার যোসেফের হস্তে সমর্পণ করিলেন এবং তথাকার লোকদের সমস্ত কর্ম যোসেফের আজ্ঞা অনুসারে চলিত লাগিল। কারারক্ষক তাঁহার হস্তগত কোন বিষয়ে দৃষ্টিপাত করিতেন না।” (আদি পুস্তক ৩৯: ২২, ২৩)