وَقَالَ لِلَّذِى ظَنَّ أَنَّهُۥ نَاجٍۢ مِّنْهُمَا ٱذْكُرْنِى عِندَ رَبِّكَ فَأَنسَىٰهُ ٱلشَّيْطَـٰنُ ذِكْرَ رَبِّهِۦ فَلَبِثَ فِى ٱلسِّجْنِ بِضْعَ سِنِينَ
আবার তাদের মধ্য থেকে যার সম্পর্কে ধারণা ছিল যে, সে মুক্তি পাবে ইউসুফ তাকে বললোঃ “তোমার প্রভুকে (মিসরের বাদশাহ) আমার কথা বলো।” কিন্তু শয়তান তাকে এমন গাফেল করে দিল যে, সে তার প্রভুকে (মিসরের বাদশাহ) তার কথা বলতে ভুলে গেলো। ফলে ইউসুফ কয়েক বছর কারাগারে পড়ে রইলো। ৩৫
৩৫
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় কোন কোন মুফাসসির বলেছেন, “শয়তান হযরত ইউসুফকে তাঁর রবের (অর্থাৎ আল্লাহ) স্মরণ থেকে গাফেল করে দেয় এবং তিনি এক বান্দার কাছে চান যে, সে তার রবের (মিসরের বাদশাহর) কাছে তার কথা আলোচনা করে তার কারামুক্তির চেষ্টা করুক, তাই আল্লাহ তাঁকে কয়েক বছর জেলখানা পড়ে থাকার শাস্তি দেন।” মূলত এটি পুরোপুরি একটি ভুল ব্যাখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। এর সঠিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, যেমন আল্লামা ইবনে কাসীর এবং প্রথম যুগের তাফসীরকারদের মধ্যে মুজাহিদ, মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক ইত্যাদি তাফসীরকারগণ বলেন, فَأَنْسَاهُ الشَّيْطَانُ ذِكْرَ رَبِّهِ (শয়তান তাকে ভুলিয়ে দেয় তার রবের বা প্রভুর স্মরণ) এর মধ্যে “তার” বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে যার সম্পর্কে হযরত ইউসুফের ধারণা ছিল যে, সে মুক্তি পাবে এবং এ আয়াতের মানে হচ্ছে, “শয়তান তার প্রভুর কাছে হযরত ইউসুফের বিষয়টা উত্থাপন করার কথা ভুলিয়ে দিয়েছিল।” এ প্রসঙ্গে একটি হাদীসও পেশ করা হয়। হাদীসটিতে বলা হয়েছেঃ নবী ﷺ বলেছেন, “ইউসুফ আলাইহিস সালাম যে কথা বলেছিলেন সে কথা যদি তিনি না বলতেন তাহলে তিনি কয়েক বছর কারাগারে আটক থাকতেন না।” কিন্তু আল্লামা ইবনে কাসীর বলেছেনঃ “এ হাদীস যে ক’টি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে সব কটিই দুর্বল। কোন কোন সূত্রে এটি “মরফূ” হাদীস। সেখানে বর্ণনাকারী হচ্ছে সুফিয়ান ইবন ওয়াকী’ ও ইবরাহীম ইবনে ইয়াযীদ। এরা উভয়ই অনির্ভরযোগ্য। আবার কোন কোন সূত্রে এটি “মুরসাল” হাদীস। কিন্তু এ ধরনের বিষয়ে মুরসাল হাদীসের ওপর ভরসা করা যেতে পারে না।” এছাড়া একজন মজলুম ব্যক্তি নিজের মুক্তির জন্য পার্থিব পন্থা অবলম্বন করাকে আল্লাহ থেকে গাফলতির ও তাঁর প্রতি অনির্ভরশীলতার প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হবে---একথা যুক্তির দিক দিয়েও গ্রহণযোগ্য নয়।