وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَوْلَآ أُنزِلَ عَلَيْهِ ءَايَةٌۭ مِّن رَّبِّهِۦٓ ۗ إِنَّمَآ أَنتَ مُنذِرٌۭ ۖ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ
যারা তোমার কথা মেনে নিতে অস্বীকার করেছে তারা বলে, “এ ব্যক্তির ওপর এর রবের পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন?” ১৫ - তুমি তো শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী, আর প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য রয়েছে একজন পথপ্রদর্শক। ১৬
১৫
এখানে তারা এমন নিশানীর কথা বলতে চাচ্ছিল যা দেখে তারা মুহাম্মাদ ﷺ এর আল্লাহর রসূল হবার ওপর ঈমান আনতে পারে। তারা তাঁর কথাকে তাঁর সত্যতার যুক্তির সাহায্যে বুঝতে প্রস্তুত ছিল না। তারা তাঁর পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন জীবনধারা ও চরিত্র থেকে শিক্ষা নিতে প্রস্তুত ছিল না। তাঁর শিক্ষার প্রভাবে তাঁর সাহাবীগণের জীবনে যে ব্যাপক ও শক্তিশালী নৈতিক বিপ্লব সাধিত হচ্ছিল তা থেকেও তারা কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে প্রস্তুত ছিল না। তাদের মুশরিকী ধর্ম এবং জাহেলী কল্পনা ও ভাববাদিতার ভ্রান্তি সুস্পষ্ট করার জন্য কুরআন যেসব বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি-প্রমাণ উপস্থাপন করা হচ্ছিল তারা সেগুলোর প্রতি কর্ণপাত করতে প্রস্তুত ছিল না। এসব বাদ দিয়ে তারা চাচ্ছিল তাদেরকে এমন কোন তেলেসমাতি দেখানো হোক যার মাধ্যমে তারা মুহাম্মাদ ﷺ কে যাচাই করতে পারে।
১৬
এটি হচ্ছে তাদের দাবীর সংক্ষিপ্ত জবাব। তাদেরকে সরাসরি এ জবাব দেবার পরিবর্তে আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মাদ ﷺ কে সম্বোধন করে এ জবাব দিয়েছেন। এর অর্থ হচ্ছে, হে নবী! তাদেরকে নিশ্চিন্ত করার জন্য কোন ধরনের তেলেসমাতি দেখানো হবে এ ব্যাপারটি নিয়ে তুমি কোন চিন্তা করো না। প্রত্যেককে নিশ্চিন্ত করা তোমার কাজ নয়। তোমার কাজ হচ্ছে কেবলমাত্র গাফলতির ঘুমে বিভোর লোকদেরকে জাগিয়ে দেয়া এবং ভুল পথে চলার পরিণাম সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করা। প্রত্যেক যুগে প্রত্যেক জাতির মধ্যে একজন হেদায়াতকারী যুক্ত করে আমি এ দায়িত্ব সম্পাদন করেছি। এখন তোমাকেও এ দায়িত্ব সম্পাদনে নিয়োজিত করা হয়েছে। এরপর যার মন চায় চোখ খুলতে পারে এবং যার মন চায় গাফলতির মধ্যে ডুবে থাকতে পারে। এ সংক্ষিপ্ত জবাব দিয়ে আল্লাহ তাদের দাবীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন এবং তাদেরকে এ বলে সতর্ক করে দেন যে, তোমরা এমন কোন রাজ্যে বাস করছো না যেখানে কোন শাসন, শৃংখলা ও কর্তৃত্ব নেই। তোমাদের সম্পর্ক এমন এক আল্লাহর সাথে যিনি তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তিকে যখন সে তার মায়ের জঠরে আবদ্ধ ছিল তখন থেকেই জানেন এবং সারা জীবন তোমাদের প্রত্যেকটি কাজের প্রতি নজর রাখেন। তার দরবারে তোমাদের ভাগ্য নির্ণীত হবে নির্ভেজাল আদল ও ইনসাফের ভিত্তিতে, তোমাদের প্রত্যেকের দোষ-গুণের প্রেক্ষিতে। পৃথিবী ও আকাশে তার ফায়সালাকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কারোর নেই।