নামকরণ
৩৫ নং আয়াতে উল্লেখিত وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ اجْعَلْ هَذَا الْبَلَدَ آمِنًا বাক্যাংশ থেকে এ সূরার নাম গৃহীত হয়েছে। এ নামকরণের মানে এ নয় যে, এ সূরায় হযরত ইবরাহীমের জীবন বৃত্তান্ত বর্ণনা করা হয়েছে। বরং অধিকাংশ সূরার নামের মতো এখানেও আলামত হিসেবে এ নাম ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ এটি এমন একটি সূরা যেখানে ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নাযিলের সময়-কাল
সূরাটির সাধারণ বর্ণনা পদ্ধতি মক্কার শেষ যুগের সূরাগুলোর মতো। তাই এটি সূরা রা’আদের নিকটবর্তী কালে অবতীর্ণ বলে মনে হয়। বিশেষ করে ১৩ নং আয়াতের وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِرُسُلِهِمْ لَنُخْرِجَنَّكُمْ مِنْ أَرْضِنَا أَوْ لَتَعُودُنَّ فِي مِلَّتِنَا এবং অস্বীকারকারীরা নিজেদের রসূলদের বললো, তোমাদের ফিরে আসতে হবে আমাদের ধর্মীয় জাতিসত্তার মধ্যে, অন্যথায় আমরা তোমাদের বের করে দেবো (আমাদের দেশ থেকে) শব্দাবলী থেকে পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, সে সময় মক্কায় মুসলমানদের ওপর জুলুম-নিপীড়ন চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। মক্কাবাসীরা অতীতের কাফের জাতিগুলোর মতো তাদের দেশের মুমিন সমাজকে দেশ থেকে উৎখাত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল। এ জন্য অতীতে তাদের মতো যেসব জাতি একই কর্মনীতি অবলম্বন করেছিল তাদেরকে যে ধরনের হুমকি দেয়া হয়েছিল তাদেরকেও সেই একই হুমকি দেয়া হয়। অতীতের কাফের জাতিসমূহকে হুমকি দেয়া হয়েছিল, لَنُهْلِكَنَّ الظَّالِمِينَ(আমি জালেমদেরকে ধ্বংস করে ছাড়বো, । অন্যদিকে মুমিনদেরকে তাদের পূর্ববর্তীদের মতো একই সান্ত্বনা দেয়া হয়। তাদেরকে বলা হয়ঃ لَنُسْكِنَنَّكُمُ الْأَرْضَ مِنْ بَعْدِهِمْ অর্থাৎ এ জালেমদেরকে খতম করার পর আমি এ ভূখন্ডে তোমাদের বসতি স্থাপন করাবো।এভাবে শেষ রুকূ’র আলোচ্য বিষয় থেকেও অনুমান করা যায় যে, এ সূরাটি মক্কার শেষ যুগের সাথে সম্পর্ক রাখে।