۞ قَالَتْ رُسُلُهُمْ أَفِى ٱللَّهِ شَكٌّۭ فَاطِرِ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۖ يَدْعُوكُمْ لِيَغْفِرَ لَكُم مِّن ذُنُوبِكُمْ وَيُؤَخِّرَكُمْ إِلَىٰٓ أَجَلٍۢ مُّسَمًّۭى ۚ قَالُوٓا۟ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا بَشَرٌۭ مِّثْلُنَا تُرِيدُونَ أَن تَصُدُّونَا عَمَّا كَانَ يَعْبُدُ ءَابَآؤُنَا فَأْتُونَا بِسُلْطَـٰنٍۢ مُّبِينٍۢ
তাদের রসূলরা বলে, “আল্লাহর ব্যাপারে কি সন্দেহ আছে, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা? ১৭ তিনি তোমাদের ডাকছেন তোমাদের গুনাহ মাফ করার এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের অবকাশ দেয়ার জন্য।” ১৮ তারা জবাব দেয়, “তোমরা আমাদের মতো মানুষ ছাড়া আর কিছুই নও। ১৯ বাপ-দাদাদের থেকে যাদের ইবাদাত চলে আসছে তোমরা তাদের ইবাদাত থেকে আমাদের ফেরাতে চাও। ঠিক আছে তাহলে আনো কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ।” ২০
১৭
রসূলদের একথা বলার কারণ হচ্ছে এই যে, প্রত্যেক যুগের মুশরিকরা আল্লাহর অস্তিত্ব মানতো এবং আল্লাহ পৃথিবী ও আকাশের স্রষ্টা একথাও স্বীকার করতো। এরই ভিত্তিতে রসূলগণ বলেছেন, এরপর তোমাদের সন্দেহ থাকে কিসে? আমরা যে জিনিসের দিকে তোমাদের দাওয়াত দিচ্ছি তা এছাড়া আর কিছুই নয় যে, পৃথিবী ও আকাশের স্রষ্টা আল্লাহ তোমাদের বন্দেগী লাভের যথার্থ হকদার। এরপরও কি আল্লাহর ব্যাপারে তোমাদের সন্দেহ আছে?
১৮
নির্দিষ্ট সময় মানে ব্যক্তির মৃত্যুকালও হতে পারে আবার কিয়ামতও হতে পারে। জাতিসমূহের উত্থান ও পতনের ব্যাপারে বলা যেতে পারে, আল্লাহর কাছে তাদের উত্থান-পতনের সময় কাল নির্দিষ্ট হওয়ার বিষয়টি তাদের গুণগত অবস্থার ওপর নির্ভরশীল। একটি ভালো জাতি যদি তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে বিকৃতির সৃষ্টি করে তাহলে তার কর্মের অবকাশ কমিয়ে দেয়া হয় এবং তাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়। আর একটি ভ্রষ্ট জাতি যদি নিজেদের অসৎগুণাবলীকে শুধরে নিয়ে সৎগুণাবলীতে পরিবর্তিত করে তাহলে তার কর্মের অবকাশ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এমনকি তা কিয়ামত পর্যন্তও দীর্ঘায়িত হতে পারে। এ বিষয়বস্তুর দিকেই সূরা রা’আদের ১১ আয়াতে ইঙ্গিত করে। আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহ কোন জাতির অবস্থার ততক্ষন পরিবর্তন ঘটান না যতক্ষণ না সে নিজের গুণাবলীর পরিবর্তন করে।
১৯
তাদের কথার অর্থ ছিল এই যে, তোমাকে আমরা সব দিক দিয়ে আমাদের মত একজন মানুষই দেখছি। তুমি পানাহার করো, নিদ্রা যাও, তোমার স্ত্রী ও সন্তানাদি আছে তোমার মধ্যে ক্ষুধা, পিপাসা, রোগ, শোক, ঠাণ্ডা ও গরমের তথা সব জিনিসের অনুভূতি আছে। এসব ব্যাপারে এবং সব ধরনের মানবিক দুর্বলতার ক্ষেত্রে আমাদের সাথে তোমার সাদৃশ্য রয়েছে। তোমার মধ্যে এমন কোন অসাধারণত্ব দেখছি না যার ভিত্তিতে আমরা এ কথা মেনে নিতে পারি যে, তুমি আল্লাহর কাছে পৌঁছে গিয়েছো, আল্লাহ তোমার সাথে কথা বলেন এবং ফেরেশতারা তোমার কাছে আসে।
২০
অর্থাৎ এমন কোন প্রমাণ যা আমরা চোখে দেখি এবং হাত দিয়ে স্পর্শ করি। যে প্রমাণ দেখে আমরা বিশ্বাস করতে পারি যে, যথার্থই আল্লাহ তোমাকে পাঠিয়েছেন এবং তুমি এই যে বাণী এনেছো তা আল্লাহর বাণী।