وَلَقَدْ جَعَلْنَا فِى ٱلسَّمَآءِ بُرُوجًۭا وَزَيَّنَّـٰهَا لِلنَّـٰظِرِينَ
আকাশে আমি অনেক মজবুত দূর্গ নির্মাণ করেছি, ৮ দর্শকদের জন্য সেগুলো সুসজ্জিত করেছি, ৯
৮
আরবী ভাষায় দূর্গ, প্রাসাদ ও মজবুত ইমারতকে বুরুজ বলা হয়। প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যায় সূর্যের পরিভ্রমণ পথকে যে বারটি স্তরে বা রাশিচক্রে বিভক্ত করা হয়েছিল ‘বুরুজ’ শব্দটিকে পারিভাষিক অর্থে সেই বারটি স্তরের জন্য ব্যবহার করা হতো। এ কারণে কুরআন ঐ বুরুজগুলোর দিকে ইঙ্গিত করেছে বলে কোন কোন মুফাস্সির মনে করেছেন। আবার কোন কোন মুফাস্সির এটিকে গ্রহ অর্থে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু পরবর্তী বক্তব্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে মনে হবে, এর অর্থ সম্ভবত উর্ধ্বজগতের এমন সব অংশ যার মধ্যকার প্রত্যেকটি অংশকে অত্যন্ত শক্তিশালী সীমান্ত অন্যান্য অংশ থেকে আলাদা করে রেখেছে। যদিও এ সীমান্তরেখা মহাশূন্যে অদৃশ্যভাবে অঙ্কিত হয়ে আছে তবুও সেগুলো অতিক্রম করে কোন জিনিসের এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাওয়া খুবই কঠিন। এ অর্থের প্রেক্ষিতে আমি বুরুজ শব্দটিকে সংরক্ষিত অঞ্চলসমূহ (Fortified spheres) অর্থে গ্রহণ করা অধিকতর নির্ভুল বলে মনে করি।
৯
অর্থাৎ প্রত্যেক অঞ্চলে কোন না কোন উজ্জ্বল গ্রহ বা তারকা রেখে দিয়েছেন এবং এভাবে সমগ্র জগত ঝলমলিয়ে উঠেছে। অন্যকথায়, আমি দৃশ্যত কুলকিনারাহীন এ বিশ্ব জগতকে একটি বিশাল পরিত্যক্ত ভূতুড়ে বাড়ি বানিয়ে রেখে দেইনি। বরং তাকে এমন একটি সুন্দর সুসজ্জিত জগৎ বানিয়ে রেখেছি যার মধ্যে সর্বত্র সবদিকে নয়নাভিরাম দীপ্তি ছাড়িয়ে রয়েছে। এ শিল্পকর্মে শুধুমাত্র একজন মহান কারিগরের অতুলনীয় শিল্প নৈপুণ্য এবং একজন মহাবিজ্ঞানীর অনুপম বৈজ্ঞানিক কুশলতাই দৃষ্টিগোচর হয় না বরং এই সঙ্গে একজন অতীব পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রুচির অধিকারী শিল্পীর শিল্পও সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ বিষয়বস্তুটিই অন্য এক স্থানে এভাবে বলা হয়েছেঃ الَّذِي أَحْسَنَ كُلَّ شَيْءٍ خَلَقَهُ (আল্লাহ, যে জিনিসই বানিয়েছেন, চমৎকার বানিয়েছেন।) আস-সাজদাহঃ ৭