وَلَقَدْ خَلَقْنَا ٱلْإِنسَـٰنَ مِن صَلْصَـٰلٍۢ مِّنْ حَمَإٍۢ مَّسْنُونٍۢ
আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠন্ঠনে পচা মাটি থেকে। ১৭
১৭
এখানে কুরআন পরিষ্কার করে একথা বলে দিচ্ছে যে, মানুষ বির্বতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পশুত্বের পর্যায় অতিক্রম করে মানবতার পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। ডারউইনের ক্রমবিবর্তনবাদে প্রভাবিত আধুনিক যুগের কুরআনের ব্যাখ্যাতাগণ একথা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। বরং কুরআন বলছে, সরাসরি মৃত্তিকার উপাদান থেকে তার সৃষ্টিকর্ম শুরু হয়। صَلْصَالٍ مِنْ حَمَإٍ مَسْنُونٍ (শুকনো ঠন্ঠনে পঁচা মাটি) শব্দাবলীর মাধ্যমে একথা ব্যক্ত করা হয়েছে। حَمَإٍ বলতে আরবী ভাষায় এমন ধরনের কালো কাদা মাটিকে বুঝায় যার মধ্যে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে গেছে, যাকে আমরা নিজেদের ভাষায় পংক বা পাঁক বলে থাকি অথবা অন্য কথায় বলা যায়, যা মাটির গোলা বা মণ্ড হয়ে গেছে। مَسْنُونٍ শব্দের দুই অর্থ হয়। একটি অর্থ, পরিবর্তিত, অর্থাৎ এমন পচা, যার মধ্যে পচন ধরার ফলে চক্চকে ও তেলতেলে ভাব সৃষ্টি হয়ে গেছে। আর দ্বিতীয় অর্থ, চিত্রিত। অর্থাৎ যা একটা নির্দিষ্ট আকৃতি ও কাঠামোতে রূপান্তরিত হয়েছে। صَلْصَالٍ বলা হয় এমন পচা কাদাকে যা শুকিয়ে যাওয়ার পর ঠন্ঠন্ করে বাজে। এ শব্দাবলী থেকে পরিষ্কার জানা যাচ্ছে যে, গাঁজানো কাদা মাটির গোলা বা মণ্ড থেকে প্রথমে একটি পুতুল বানানো হয় এবং পুতুলটি তৈরী হবার পর যখন শুকিয়ে যায় তখন তার মধ্যে প্রাণ ফুঁকে দেয়া হয়।