সূরা রূমের ২৮ আয়াতে এ একই যুক্তি প্রদর্শন করা হয়েছে। সেখানে এর শব্দগুলো হচ্ছেঃ
ضَرَبَ لَكُمْ مَثَلًا مِنْ أَنْفُسِكُمْ هَلْ لَكُمْ مِنْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ مِنْ شُرَكَاءَ فِي مَا رَزَقْنَاكُمْ فَأَنْتُمْ فِيهِ سَوَاءٌ تَخَافُونَهُمْ كَخِيفَتِكُمْ أَنْفُسَكُمْ كَذَلِكَ نُفَصِّلُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
“আল্লাহর তোমাদের সামনে আরেকটি উপমা তোমাদের সত্তা থেকেই পেশ করেন। আমি তোমাদের যে রিযিক দিয়েছি তাতে কি তোমাদের গোলাম তোমাদের সাথে শরীক আছে? আর এভাবে শরীক বানিয়ে তোমরা ও তারা কি সমান সমান হয়ে গিয়েছ? এবং তোমরা কি তাদেরকে ঠিক তেমনি ভয় পাও যেমন তোমাদের সমপর্যায়ের লোকদেরকে ভয় পাও? এভাবে আল্লাহ খুলে খুলে নিশানী বর্ণনা করেন তাদের জন্য যারা বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায়।”
দু’টি আয়াতের তুলনামূলক আলোচনা করলে পরিষ্কার জানা যায়, উভয় স্থানেই একই উদ্দেশ্য, একই উপমা বা দৃষ্টান্ত প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এদের একটি অন্যটির ব্যাখ্যা করছে।
সম্ভবত أَفَبِنِعْمَةِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ বাক্যাংশ থেকেই ঐ বুদ্ধিজীবীরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। উপমা বর্ণনার পর সাথে সাথেই এ বাক্যাংশটি দেখে তারা মনে করেছে নিশ্চয়ই এর অর্থ এই হবে যে অধীনস্থদের মধ্যে রিযিক বিলিয়ে না দেয়াটাই মূলত আল্লাহর নিয়ামতের অস্বীকৃতি। অথচ যে ব্যক্তি কুরআনে সামান্য পারদর্শিতাও রাখেন তিনিই জানেন যে আল্লাহর নিয়ামতের জন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য সত্তাকে কৃতজ্ঞতা জানানো এ কিতাবের দৃষ্টিতে আল্লাহর নিয়ামতের অস্বীকৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়। এ বিষয়টির কুরআনে এত বেশী পুনরাবৃত্তি হয়েছে যে, তিলাওয়াত ও চিন্তা গবেষণায় অভ্যস্ত লোকেরা এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ প্রকাশ করতে পারেন না। অবশ্যি সূচীপত্রের সাহায্যে নিজেদের প্রয়োজনীয় প্রবন্ধ রচনাকারীগণ এ ব্যাপারটি নাও জানতে পারেন।
আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকৃতির এই তাৎপর্যটি অনুধাবন করার পর এ বাক্যাংশের অর্থ পরিষ্কার বুঝতে পারা যাচ্ছে যে, এরা যখন প্রভু ও গোলামের পার্থক্য ভাল করেই জানে এবং নিজেদের জীবনে সর্বক্ষণ এ পার্থক্যের দিকে নজর রাখে তখন একমাত্র আল্লাহর ব্যাপারেই কি এরা এত অবুঝ হয়ে গেছে যে, তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর সাথে শরীক ও তাঁর সমকক্ষ মনে করার এবং তাঁর কাছ থেকে এরা যেসব নিয়ামত লাভ করেছে সেগুলোর জন্য তাঁর বান্দাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানানোকে জরুরী মনে করে?