۞ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا عَبْدًۭا مَّمْلُوكًۭا لَّا يَقْدِرُ عَلَىٰ شَىْءٍۢ وَمَن رَّزَقْنَـٰهُ مِنَّا رِزْقًا حَسَنًۭا فَهُوَ يُنفِقُ مِنْهُ سِرًّۭا وَجَهْرًا ۖ هَلْ يَسْتَوُۥنَ ۚ ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
আল্লাহ একটি উপমা দিচ্ছেন। ৬৬ একজন হচ্ছে গোলাম, যে অন্যের অধিকারভুক্ত এবং নিজেও কোন ক্ষমতা রাখে না। দ্বিতীয়জন এমন এক ব্যক্তি যাকে আমি নিজের পক্ষ থেকে ভালো রিযিক দান করেছি এবং সে তা থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে খুব খরচ করে। বলো, এরা দু’জন কি সমান? ---আলহামদুলিল্লাহ, ৬৭ কিন্তু অধিকাংশ লোক (এ সোজা কথাটি) জানে না। ৬৮
৬৬
অর্থাৎ যদি উপমার সাহায্যে কথা বুঝতে হয় তাহালে আল্লাহ সঠিক উপমা দিয়ে তোমাদের সত্য বুঝিয়ে দেন। তোমরা যেসব উপমা দিচ্ছো সেগুলো ভুল। তাই তোমরা সেগুলো থেকে ভুল ফলাফল গ্রহণ করে থাকো।
৬৭
প্রশ্ন ও আলহাম্দুলিল্লাহ এর মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ফাঁক রয়ে গেছে। এ ফাঁক পূরণ করার জন্য আলহাম্দুলিল্লাহ এর মধ্যেই একটি তাৎপর্যময় ইঙ্গিত রয়ে গেছে। একথা সুস্পষ্ট যে, নবীর মুখ থেকে একথা শুনে মুশরিকদের পক্ষে এ দু’টি সমান এ ধরনের জবাব দেয়া কোনক্রমেই সম্ভব ছিল না। নিশ্চয়ই এর জবাবে কেউ না কেউ পরিষ্কারভাবে একথা স্বীকার করে থাকতে পারে যে, আসলে দু’টি সমান নয়। আবার কেউ এ ভয়ে নীরবতা অবলম্বন করে থাকতে পারে যে, স্বীকারোক্তিমূলক জবাব দেবার মাধ্যমে তার অনিবার্য ফলাফলকেও স্বীকার করে নিতে হবে এবং এর ফলে স্বতস্ফূর্তভাবেই তাদের শিরক বাতিল হয়ে যাবে। কাজেই নবী উভয়ের জবাব পেয়ে বললেন, আলহাম্দুল্লিল্লাহ। স্বীকারকারীদের স্বীকারোক্তির পরও আলহাম্দুল্লিল্লাহ এবং নীরবতা পালনকারীদের নীরবতার ওপরও আলহাম্দুলিল্লাহ। প্রথম অবস্থাটিতে এর অর্থ হয় “আল্লাহর শোকর অন্তত এতটুকু কথা তো তোমরা বুঝতে পেরেছো।” দ্বিতীয় অবস্থায় এর অর্থ হয়, “নীরব হয়ে গেছে? আলহাম্দুলিল্লাহ, নিজেদের সমস্ত হঠকারিতা সত্ত্বেও দু’টি অবস্থা সমান বলে দেবার হিম্মত তোমাদেরও নেই।”
৬৮
অর্থাৎ যদিও তারা মানুষের মধ্যে ক্ষমতাহীন ও ক্ষমতাধরের মধ্যকার পার্থক্য অনুভব করে এবং এ পার্থক্য সামনে রেখেই প্রত্যেকের সাথে আলাদা আলাদা আচরণ করে, তবুও তারা এমনি মূর্খ ও অবুঝ সেজে আছে যে, স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যকার পার্থক্য তারা বুঝতে পারে না। স্রষ্টার সত্তা, গুণাবলী, অধিকার, শক্তিমত্তা সবকিছুতেই তারা সৃষ্টিকে শরীক মনে করছে এবং সৃষ্টির সাথে এমন আচরণ করছে যা একমাত্র স্রষ্টার সাথেই করা যেতে পারে। উপায় উপকরণের ওপর নির্ভরশীল এ জগতে কারোর কাছে কোন জিনিস চাইতে হলে আমরা গৃহম্বামীর কাছেই চেয়ে থাকি, চাকর বাকরদের কাছে চাই না। কিন্তু সমগ্র দয়া-দাক্ষিণ্যের উৎস যেই সত্তা, তার কাছ থেকে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য যখন সচেষ্ট হই, তখন সমগ্র বিশ্ব-জাহানের মালিককে বাদ দিয়ে তাঁর বান্দাদের কাছে হাত পাতি।