وَجَعَلْنَا ٱلَّيْلَ وَٱلنَّهَارَ ءَايَتَيْنِ ۖ فَمَحَوْنَآ ءَايَةَ ٱلَّيْلِ وَجَعَلْنَآ ءَايَةَ ٱلنَّهَارِ مُبْصِرَةًۭ لِّتَبْتَغُوا۟ فَضْلًۭا مِّن رَّبِّكُمْ وَلِتَعْلَمُوا۟ عَدَدَ ٱلسِّنِينَ وَٱلْحِسَابَ ۚ وَكُلَّ شَىْءٍۢ فَصَّلْنَـٰهُ تَفْصِيلًۭا
দেখো, আমি রাত ও দিনকে দু’টি নিদর্শন বানিয়েছি। রাতের নিদর্শনকে বানিয়েছি আলোহীন এবং দিনের নিদর্শনকে করেছি আলোকোজ্জ্বল, যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ তালাশ করতে পারো এবং মাস ও বছরের হিসেব জানতে সক্ষম হও। এভাবে আমি প্রত্যেকটি জিনিসকে আলাদাভাবে পৃথক করে রেখেছি। ১৩
১৩
এর অর্থ হচ্ছে, বিরোধ ও বৈষম্যের কারণে ঘাবড়ে গিয়ে সবকিছু সমান ও একাকার করে ফেলার জন্য অস্থির হয়ে পড়ো না। এ দুনিয়ার সমগ্র কারখানাটাই তো বিরোধ, বৈষম্য ও বৈচিত্রের ভিত্তিতে চলছে। এর সবচেয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে তোমাদের সামনে প্রতিদিন এ রাত ও দিনের যাওয়া আসা। দেখো, এদের এ বৈষম্য তোমাদের কত বড় উপকার করছে। যদি তোমরা চিরকাল রাত বা চিরকাল দিনের মধ্যে অবস্থান করতে তাহলে কি এ প্রাকৃতিক জগতের সমস্ত কাজ কারবার চলতে পারতো? কাজেই যেমন তোমরা দেখছো বস্তু জগতের মধ্যে পার্থক্য, বিরোধ ও বৈচিত্রের সাথে অসংখ্য উপকার ও কল্যাণ জড়িত রয়েছে অনুরূপভাবে মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি, চিন্তা-ভাবনা ও মেজাজ-প্রবণতার মধ্যে যে পার্থক্য ও বৈচিত্র পাওয়া যায় তাও বিরাট কল্যাণকর। মহান আল্লাহ তাঁর অতিপ্রাকৃত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এ পার্থক্য ও বৈষম্য খতম করে সমস্ত মানুষকে জোরপূর্বক মু’মিন ও সৎ বানিয়ে দেবেন অথবা কাফের ও ফাসেকদেরকে ধ্বংস করে দিয়ে দুনিয়ায় শুধুমাত্র মু’মিন ও অনুগত বান্দাদেরকে বাঁচিয়ে রাখবেন, এর মধ্যে কল্যাণ নেই। এ আশা পোষণ করা ঠিক ততটাই ভুল যতটা ভুল শুধুমাত্র সারাক্ষণ দিনের আলো ফুটে থাকার এবং রাতের আঁধার আদৌ বিস্তার লাভ না করার আশা পোষণ করা। তবে যে জিনিসের মধ্যে কল্যাণ রয়েছে তা হচ্ছে এই যে, হেদায়াতের আলো যাদের কাছে আছে তারা তাকে নিয়ে গোমরাহীর অন্ধকার দূর করার জন্য অনবরত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকবে এবং যখন রাতের মতো কোন অন্ধকারের যুগ শুরু হয়ে যাবে তখন তারা সূর্যের মতো তার পিছু নেবে যতক্ষণ না উজ্জ্বল দিনের আলো ফুটে বের হয়।