قُل لَّوْ كَانَ مَعَهُۥٓ ءَالِهَةٌۭ كَمَا يَقُولُونَ إِذًۭا لَّٱبْتَغَوْا۟ إِلَىٰ ذِى ٱلْعَرْشِ سَبِيلًۭا
হে মুহাম্মাদ! এদেরকে বলো, যদি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহও থাকতো যেমন এরা বলে, তাহলে সে আরশের মালিকের জায়গায় পৌঁছে যাবার জন্য নিশ্চয়ই চেষ্টা করতো। ৪৭
৪৭
অর্থাৎ সে নিজেই আরশের মালিক হবার চেষ্টা করতো। কারণ অনেকগুলো সত্তা আল্লাহর সার্বভৌমত্বে শরীক হলে সেখানে অনিবার্যভাবে দু’টি অবস্থার সৃষ্টি হবে। এক, তারা সবাই হবে প্রত্যেকের জায়গায় স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ইলাহ। দুই, তাদের একজন হবে আসল ইলাহ আর বাদবাকি সবাই হবে তার বান্দা এবং সে তাদেরকে নিজের প্রভুত্ব কর্তৃত্বের কিছু অংশ সোপর্দ করবে। প্রথম অবস্থাটিতে কোনক্রমেই এসব স্বাধীন ক্ষমতার অধিকারী ইলাহর পক্ষে সবসময় সব ব্যাপারে পরস্পরের ইচ্ছা ও সংকল্পের প্রতি আনুকূল্য বজায় রেখে এ অনন্ত অসীম বিশ্বলোকের আইন-শৃংখলা ব্যবস্থা এতো পরিপূর্ণ ঐক্য, সামঞ্জস্য, সমতা ও ভারসাম্য সহকারে পরিচালনা করা সম্ভবপর ছিল না। তাদের পরিকল্পনা ও সংকল্পের প্রতি পদে পদেই সংঘর্ষ বাধা ছিল অনিবার্য। প্রত্যেকেই যখন দেখতো অন্য ইলাহদের সাথে আনুকুল্য ছাড়া তার প্রভুত্ব চলছে না তখন সে একাই সমগ্র বিশ্ব-জাহানের একচ্ছত্র মালিক হয়ে যাবার চেষ্টা করতো। আর দ্বিতীয় অবস্থা সম্পর্কে বলা যায়, বান্দার সত্তা প্রভুত্বের ক্ষমতা তো দূরের কথা প্রভুত্বের সামান্যতম ভাবকল্প ও স্পর্শ-গন্ধ ধারণ করার ক্ষমতাও রাখে না। যদি কোথাও কোন সৃষ্টির দিকে সামান্যতম প্রভুত্ব কর্তৃত্ব স্থানান্তরিত করে দেয়া হতো তাহলে তার পায়া ভারি হয়ে যেতো, আর সামান্য ক্ষণের জন্যও সে বান্দা হয়ে থাকতে রাজী হতো না এবং তখনি সে বিশ্ব-জাহানের ইলাহ হয়ে যাবার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করে দিতো।
যে বিশ্ব-জাহানের পৃথিবী ও আকাশের সমস্ত শক্তি মিলে একসাথে কাজ না করলে গমের একটি দানা এবং ঘাসের একটি পাতা পর্যন্তও উৎপন্ন হতে পারে না তার সম্পর্কে শুধুমাত্র একজন নিরেট মূর্খ ও স্থুলবুদ্ধিসম্পন্ন লোকই একথা চিন্তা করতে পারে যে, একাধিক স্বাধীন বা অর্ধ স্বাধীন ইলাহ তার শাসন কার্য পরিচালনা করছে। অন্যথায় যে ব্যক্তিই এ ব্যবস্থার মেজাজ ও প্রকৃতি বুঝবার জন্য সামান্যতম চেষ্টাও করেছে সে এ সিদ্ধান্তে না পৌঁছে থাকতে পারে না যে, এখানে শুধুমাত্র একজনেরই প্রভুত্ব চলছে এবং তাঁর সাথে অন্য কারোর কোন পর্যায়েই কোন প্রকারের শরীক হবার আদৌ কোন সম্ভাবনা নেই।