قَالَ كَذَٰلِكِ قَالَ رَبُّكِ هُوَ عَلَىَّ هَيِّنٌۭ ۖ وَلِنَجْعَلَهُۥٓ ءَايَةًۭ لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةًۭ مِّنَّا ۚ وَكَانَ أَمْرًۭا مَّقْضِيًّۭا
ফেরেশতা বললো, “এমনটিই হবে, তোমার রব বলেন, এমনটি করা আমার জন্য অতি সহজ আর আমি এটা এ জন্য করবো যে, এই ছেলেকে আমি লোকদের জন্য একটি নির্দশন ১৫ ও নিজের পক্ষ থেকে একটি অনুগ্রহে পরিণত করবো এবং এ কাজটি হবেই।”
১৫
ইতিপূর্বে ৬ টীকায় আমরা ইঙ্গিত করেছি, হযরত মারয়ামের বিস্ময়ের জবাবে ফেরেশতার “এমনটিই হবে” একথা বলার কোনক্রমেই এ অর্থ হতে পারে না যে, মানুষ তোমাকে স্পর্শ করবে এবং তোমার ছেলে হবে। বরং এর পরিষ্কার অর্থ হচ্ছে, এই যে, কোন মানুষ তোমাকে স্পর্শ না করা সত্ত্বেও তোমার ছেলে হবে। উপরে এ একই শব্দাবলীর মাধ্যমে হযরত যাকারিয়ার বিস্ময়ও উদ্ধৃত হয়েছে এবং সেখানেও ফেরেশতা সেই একই জবাব দিয়েছে। একথা পরিষ্কার, সেখানে এ জবাবটির যে অর্থ এখানেও তাই। অনুরূপভাবে সূরা যারিয়াতের ২৮-৩০ আয়াতে যখন ফেরেশতা হযরত ইবরাহীমকে (আ) পুত্রের সুসংবাদ দেন এবং হযরত সারাহ বলেন, আমার মতো বুড়ী বন্ধ্যা মেয়েলোকের আবার ছেলে হবে কেমন করে? তখন ফেরেশতা তাঁকে জবাব দেন, كَذَلِكَ
“এমনটিই হবে।” একথা সুস্পষ্ট যে, এর অর্থ হচ্ছে, বার্ধক্য ও বন্ধ্যাত্ব সত্ত্বেও তাদের ছেলে হবেই। তাছাড়া যদি كَذَلِكَ অর্থ এই নেয়া হয় যে, মানুষ তোমাকে স্পর্শ করবে এবং তোমার ছেলে হবে ঠিক তেমনি ভাবে যেমন সারা দুনিয়ার মেয়েদের ছেলে হয়, তাহলে তো পরবর্তী বাক্য দু’টি একেবারেই অর্থহীন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় একথা বলার কি প্রয়োজন থাকে যে, তোমার রব বলেছেন, এমনটি করা আমার জন্য অতি সহজ এবং আমি ছেলেটিকে একটি নিদর্শন করতে চাই? নিদর্শন শব্দটি এখানে সুস্পষ্টভাবে মু’জিযা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে এবং বাক্যটি একথাই প্রকাশ করে যে, “এমনটি করা আমার জন্য বড়ই সহজ।” কাজেই এ উক্তির অর্থ এছাড়া আর কিছুই নয় যে, আমি এ ছেলেটির সত্তাকে বনী ইসরাঈলের সামনে একটি মু’জিযা হিসেবে পেশ করতে চাই। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের সত্তাকে কিভাবে বনী ইসরাঈলের সামনে মুজিযা হিসেবে পেশ করা হয় পরবর্তী বিবরণ নিজেই তা সুস্পষ্ট করে দিয়েছে।