আয়াত
৭১ ) তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে জাহান্নাম অতিক্রম করবে না। ৪৪ এতো একটা স্থিরীকৃত ব্যাপার, যা সম্পন্ন করা তোমার রবের দায়িত্ব।
وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا ٧١
৭২ ) তারপর যারা (দুনিয়ায়) মুত্তাকী ছিল তাদেরকে আমি বাঁচিয়ে নেবো এবং জালেমদেরকে তার মধ্যে নিক্ষিপ্ত অবস্থায় রেখে দেবো।
ثُمَّ نُنَجِّى ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوا۟ وَّنَذَرُ ٱلظَّٰلِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا ٧٢
৭৩ ) এদেরকে যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত শুনানো হয় তখন অস্বীকারকারীরা ঈমানদারদেরকে বলে, “বলো, আমাদের দু’দলের মধ্যে কে ভালো অবস্থায় আছে এবং কার মজলিসগুলো বেশী জাঁকালো?” ৪৫
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتُنَا بَيِّنَٰتٍ قَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَىُّ ٱلْفَرِيقَيْنِ خَيْرٌ مَّقَامًا وَأَحْسَنُ نَدِيًّا ٧٣
৭৪ ) অথচ এদের আগে আমি এমন কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি যারা এদের চেয়ে বেশী সাজ-সরঞ্জামের অধিকারী ছিল এবং বাহ্যিক শান-শওকতের দিক দিয়েও ছিল এদের চেয়ে বেশী অগ্রসর।
وَكَمْ أَهْلَكْنَا قَبْلَهُم مِّن قَرْنٍ هُمْ أَحْسَنُ أَثَٰثًا وَرِءْيًا ٧٤
৭৫ ) এদেরকে বলো, যে ব্যক্তি গোমরাহীতে লিপ্ত হয় করুণাময় তাকে ঢিল দিতে থাকেন, এমনকি এ ধরনের লোকেরা যখন এমন জিনিস দেখে নেয় যার ওয়াদা তাদের সাথে করা হয়- তা আল্লাহর আযাব হোক বা কিয়ামতের সময়- তখন তারা জানতে পারে, কার অবস্থা খারাপ এবং কার দল দুর্বল!
قُلْ مَن كَانَ فِى ٱلضَّلَٰلَةِ فَلْيَمْدُدْ لَهُ ٱلرَّحْمَٰنُ مَدًّا حَتَّىٰٓ إِذَا رَأَوْا۟ مَا يُوعَدُونَ إِمَّا ٱلْعَذَابَ وَإِمَّا ٱلسَّاعَةَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ شَرٌّ مَّكَانًا وَأَضْعَفُ جُندًا ٧٥
৭৬ ) বিপরীত পক্ষে যারা সত্য-সঠিক পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদেরকে সঠিক পথে চলার ক্ষেত্রে উন্নতি দান করেন ৪৬ এবং স্থায়িত্ব লাভকারী সৎকাজগুলোই তোমার রবের প্রতিদান ও পরিণামের দিক দিয়ে ভালো।
وَيَزِيدُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ٱهْتَدَوْا۟ هُدًى وَٱلْبَٰقِيَٰتُ ٱلصَّٰلِحَٰتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ مَّرَدًّا ٧٦
৭৭ ) তারপর তুমি কি দেখেছো সে লোককে যে আমার আয়াতসমূহ মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং বলে, আমাকে তো ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দান করা হতে থাকবেই? ৪৭
أَفَرَءَيْتَ ٱلَّذِى كَفَرَ بِـَٔايَٰتِنَا وَقَالَ لَأُوتَيَنَّ مَالًا وَوَلَدًا ٧٧
৭৮ ) সে কি গায়েবের খবর জেনে গেছে অথবা সে রহমানের থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে রেখেছে?
أَطَّلَعَ ٱلْغَيْبَ أَمِ ٱتَّخَذَ عِندَ ٱلرَّحْمَٰنِ عَهْدًا ٧٨
৭৯ ) -কখখনো নয়, সে যা কিছু বলছে তা আমি লিখে নেবো। ৪৮ এবং তার জন্য আযাবের পসরা আরো বাড়িয়ে দেবো।
كَلَّا سَنَكْتُبُ مَا يَقُولُ وَنَمُدُّ لَهُۥ مِنَ ٱلْعَذَابِ مَدًّا ٧٩
৮০ ) যে সাজ-সরঞ্জাম ও জনবলের কথা এ ব্যক্তি বলছে তা সব আমার কাছেই থেকে যাবে এবং সে একাকী আমার সামনে হাযির হয়ে যাবে।
وَنَرِثُهُۥ مَا يَقُولُ وَيَأْتِينَا فَرْدًا ٨٠
৪৪.
অতিক্রম করা মানে কোন কোন রেওয়াতে প্রবেশ করা বলা হয়েছে। কিন্তু এই রেওয়াতগুলোর কোনটির সনদও নবী ﷺ পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য বর্ণনা পরস্পরায় পৌঁছেনি। আবার একথাটি কুরআন মজীদ এবং বিপুল সংখ্যক সহী হাদীসেরও বিরোধী, যেগুলোতে সৎকর্মশীল মু’মিনদের জাহান্নামে প্রবেশ না করার কথা চূড়ান্তভাবে বলে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কুরআনে উল্লেখিত মূল শব্দ وَرُود এর আভিধানিক অর্থও প্রবেশ করা নয়। তাই এটিই এর সঠিক অর্থ যে, সবাইকেই জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে। কিন্তু যেমন পরবর্তী আয়াতে বলা হয়েছে, মুত্তাকীদেরকে তা থেকে বাঁচিয়ে নেয়া হবে এবং জালেমদেরকে তার মধ্যে ফেলে দেয়া হবে।
৪৫.
অর্থাৎ তাদের যুক্তি ছিল এ রকমঃ দেখে নাও দুনিয়ায় কার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও নিয়ামত বর্ষণ করা হচ্ছে? কার গৃহ বেশী জমকালো? কার জীবন যাত্রার নাম বেশী উন্নত? কার মজলিসগুলো বেশী আড়ম্বরপূর্ণ? যদি আমরা এসব কিছুর অধিকারী হয়ে থাকে এবং তোমরা এসব থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকো তাহলে তোমরা নিজেরাই চিন্তা করে দেখো, এটা কেমন করে সম্ভবপর ছিল যে, আমরা বাতিলের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকেও এভাবে দুনিয়ার কাজ লুটে যেতে থাকবো আর তোমরা হকের পথে অগ্রসর হয়েও এ ধরনের ক্লান্তিকর জীবন যাপন করে যেতে থাকবে? আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, আল কাহফ ৩৭-৩৮ টীকা।
৪৬.
অর্থাৎ প্রত্যেক পরীক্ষার সময় আল্লাহ তাদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার এবং সঠিক পথে চলার সুযোগ দান করেন। তাদেরকে অসৎ কাজও ভুল-ভ্রান্তি থেকে বাঁচান। তাঁর হেদায়াত ও পথ নির্দেশনার মাধ্যমে তারা অনবরত সত্য-সঠিক পথে এগিয়ে চলে।
৪৭.
অর্থাৎ সে বলে তোমরা আমাকে যতই পথভ্রষ্ট ও দূরাচার বলতে এবং আল্লাহর আযাবের ভয় দেখাতে থাকো না কেন আমি তো আজো তোমাদের চাইতে অনেক বেশী সচ্ছল এবং আগামীতেও আমার প্রতি অনুগ্রহ ধারা বর্ষিত হতে থাকবে। আমরার ধন-দৌলত, প্রভাব,-প্রতিপত্তি ও বৈষয়িক ক্ষমতা এবং আমার খ্যাতিমান সন্তানদেরকে দেখো। আমার জীবনের কোথায় তোমরা আমার প্রতি আল্লাহর ক্রোধ ও অভিশাপের চিহ্ন দেখতে পাচ্ছো?--এটা মক্কার কোন একজন মাত্র লোকের চিন্তাধারা ছিল না বরং মাক্কার কাফেরদের প্রত্যেক সরদার ও মাতব্বর এ বিকৃত চিন্তায় ভুগছিল।
৪৮.
অর্থাৎ তার অপরাধের ফিরিস্তিতে তার এ দাম্ভিক উক্তিও শামিল করা হবে এবং এর মজাও তাকে টের পাইয়ে দেয়া হবে।