۞ أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ خَرَجُوا۟ مِن دِيَـٰرِهِمْ وَهُمْ أُلُوفٌ حَذَرَ ٱلْمَوْتِ فَقَالَ لَهُمُ ٱللَّهُ مُوتُوا۟ ثُمَّ أَحْيَـٰهُمْ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى ٱلنَّاسِ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ
তুমি ২৬৫ কি তাদের অবস্থা সম্পর্কে কিছু চিন্তা করেছো, যারা মৃত্যুর ভয়ে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বের হয়ে পড়েছিল এবং তারা সংখ্যায়ও ছিল হাজার হাজার? আল্লাহ তাদের বলেছিলেনঃ মরে যাও, তারপর তিনি তাদের পুনর্বার জীবন দান করেছিলেন। ২৬৬ আসলে আল্লাহ মানুষের ওপর বড়ই অনুগ্রহকারী কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
২৬৫
এখান থেকে আর একটি ধারাবাহিক ভাষণ শুরু হচ্ছে। এই ভাষণে মুসলমানদের আল্লাহর পথে জিহাদ ও অর্থ-সম্পদ দান করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। যেসব দুর্বলতার কারণে বনী ইসরাঈলরা অবশেষে অবনতি ও পতনের শিকার হয় সেগুলো থেকে মুসলমানদের দূরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখানে আলোচিত বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য এ বিষয়টি সামনে রাখতে হবে যে, মুসলমানরা সে সময় মক্কা থেকে বহিস্কৃত হয়েছিল, এক দেড় বছর থেকে তারা মদীনায় আশ্রয় নিয়েছিল এবং কাফেরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিজেরাই বারবার যুদ্ধ করার অনুমতি চাইছিল। কিন্তু যুদ্ধের অনুমতি দেয়ার পর এখন তাদের মধ্যে কিছু লোক ইতস্তত করছিল, যেমন ২৬ রুকু’র শেষ অংশে বলা হয়েছে। তাই এখানে বনী ইসরাঈলের ইতিহাসের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা থেকে মুসলমানদের শিক্ষা দেয়া হয়েছে।
২৬৬
এখানে বনী ইসরাঈলদের মিসর ত্যাগের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। সূরা মা-য়েদাহর চতুর্থ রুকূ’তে এর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। বিপুল সংখ্যক বনী ইসরাঈল মিসর থেকে বের হয়ে গৃহ ও সহায় সম্বলহীন অবস্থায় বিস্তীর্ণ ধূঁ ধূঁ প্রান্তরে ঘুরে ফিরছিল। তারা একটি নির্দিষ্ট আবাস লাভের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছিল কিন্তু যখন আল্লাহর ইঙ্গিতে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম তাদের জালেম কেনানীদেরকে ফিলিস্তিন থেকে উৎখাত করে ঐ এলাকাটি জয় করে নেয়ার নির্দেশ দিলেন তখন তারা কাপুরুষতার পরিচয় দিল এবং সামনে এগিয়ে যেতে অস্বীকার করলো। অবশেষে আল্লাহ তাদের চল্লিশ বছর পর্যন্ত পৃথিবীতে হয়রান-পেরেশান-বিপন্ন অবস্থার মধ্যে দিন কাটাবার জন্য ছেড়ে দিলেন। এভাবে তাদের এক পুরুষ শেষ হয়ে গেলো। নতুন বংশধররা মরুভূমির কোলে লালিত হয়ে বড় হলো। এবার আল্লাহ কেনানীদের ওপর তাদের বিজয় দান করলেন। মনে হচ্ছে, এই ব্যাপারটিকেই এখানে ‘মরে যাওয়া ও পুনর্বার জীবন দান করা’ বলা হয়েছে।