خَالِفُوا الْيَهُودَ فَإِنَّهُمْ لاَ يُصَلُّونَ فِى نِعَالِهِمْ وَلاَ خِفَافِهِمْ
“ইহুদীদের বিপরীত কাজ করো। কারণ তারা জুতা ও চামড়ার মোজা পরে নামায পড়ে না।” (আবু দাউদ)
এর অর্থ এ নয় যে, জুতা পরেই নামায পড়তে হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে, এমনটি করা জায়েজ। কাজেই উভয়বিধ কাজ করা। আবু দাউদে আমর ইবনে আসের (রা.) রেওয়ায়াত উদ্ধৃত হয়েছে।। তাতে বলা হয়েছে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উভয় অবস্থায় নামায পড়তে দেখেছেন। মুসনাদে আহমদ ও আবু দাউদে আবু সাঈদ খুদরীর (রা.) রেওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে। তাতে নবী (সা.) বলেছেনঃ “যখন তোমাদের কেউ মসজিদে আসে, সে যেন তার জুতা পরীক্ষা করে দেখে নেয়। যদি কোন নাপাকী লেগে থাকে তাহলে মাটিতে ঘসে পরিষ্কার করো এবং সে জুতা পরে নামায পড়ে নাও।” আবু হুরাইরার (রা.) রেওয়ায়াতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একথাগুলো আছেঃ “যদি তোমাদের কেউ জুতা দিয়ে নাপাকী মাড়িয়ে থাকে তাহলে মাটি তাকে পাক করে দেবার জন্য যথেষ্ট।” আর হযরত উম্মে সালমাহ (রা.) বর্ণিত রেওয়ায়াতে বলা হয়েছে يُطَهِّرُهُ مَا بَعْدَهُ অর্থাৎ “এক জায়গায় নাপাকী লেগে থাকলে অন্য জায়গায় যেতে যেতে মাটি নিজে নিজেই তাকে পাক করে দেবে।” এ বিপুল সংখ্যক হাদীসের কারণে ইমাম আবু হানীফা, ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম আওযায়ী ও ইসহাক ইবনে রাহাওয়াইয়াহ প্রমুখ ফকীহগণ এমত পোষণ করেন যে, জুতা সর্বাবস্থায় যমীনের মাটির সাহায্যে পাক হয়ে যায়। ইমাম আহমদ ও ইমাম শাফেঈর একটি উক্তিও এর সমর্থনে রয়েছে। কিন্তু ইমাম শাফেঈর সর্বজন পরিচিত উক্তি এর বিরোধী। সম্ভবত তিনি জুতা পরে নামায পড়া আদবের বিরোধী মনে করে তা করতে নিষেধ করেন। যদিও একথা মনে করা হয়েছে যে, তাঁর মতে জুতা মাটিতে ঘষলে পাক হয় না। (এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, মসজিদে নববীতে চাটাইয়ের বিছানাও ছিল না বরং কাঁকর বিছানো ছিল। কাজেই এসব হাদীসের প্রমাণের ভিত্তিতে যদি কোন ব্যক্তি আজ মসজিদের বিছানার ওপর জুতা পায়ে উঠতে চায় তাহলে তা সঠিক হবে না। তবে ঘাসের ওপর বা খোলা ময়দানে জুতা পায়ে নামায পড়তে পারে। তবে যারা মাঠে-ময়দানে জানাযার নামায পড়ার সময়ও পা থেকে জুতা খুলে ফেলার ওপর জোর দিতে থাকে তারা আসলে শরীয়াতের বিধান জানে না।)