لَقَدْ كُنْتَ فِي غَفْلَةٍ مِنْ هَذَا فَكَشَفْنَا عَنْكَ غِطَاءَكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيدٌ
“তুমি এ জিনিস থেকে গাফলতির মধ্যে পড়েছিলে, এখন আমি তোমার সামনে থেকে পরদা সরিয়ে দিয়েছি, আজ তোমার দৃষ্টি বড়ই তীক্ষ্ণ।” (কাফঃ ২২)
অর্থাৎ আজ তুমি খুব পরিষ্কার ও স্বচ্ছ দেখতে পাচ্ছো। দ্বিতীয় অবস্থা হচ্ছেঃ
إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ الْأَبْصَارُ- مُهْطِعِينَ مُقْنِعِي رُءُوسِهِمْ لَا يَرْتَدُّ إِلَيْهِمْ طَرْفُهُمْ وَأَفْئِدَتُهُمْ هَوَاءٌ
“আল্লাহ তো তাদের আযাবকে সেদিনের জন্য পিছিয়ে দিচ্ছেন যেদিন অবস্থা এমন হবে যে, দৃষ্টি বিস্ফারিত হয়েই থেকে যাবে, লোকেরা মাথা তুলে ছুটতেই থাকবে। চোখ উপরে তুলে তাকিয়েই থাকবে এবং মন দিশেহারা হয়ে যাবে।” (ইবরাহীমঃ ৪২-৪৩)
তৃতীয় অবস্থা হচ্ছেঃ
وَنُخْرِجُ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَلْقَاهُ مَنْشُورًا - اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا
“আর কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য একটি লিখন বের করবো, যাকে সে পাবে উন্মুক্ত কিতাব হিসেবে। পড়ো নিজের আমলনামা! আজ নিজের হিসেব করার জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।” (বনী ইসরাঈলঃ ১৩-১৪)
আর আমাদের আলোচ্য আয়াতে এসব অবস্থার মধ্যে একটি অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, আল্লাহর অসীম ক্ষমতাবলে তারা আখেরাতের ভয়াবহ দৃশ্য এবং নিজেদের দুষ্কৃতির ফল তো খুব ভালোভাবেই দেখবে কিন্তু তাদের দৃষ্টি শক্তি শুধুমাত্র এগুলোই দেখার যোগ্যতা সম্পন্ন হবে। বাদবাকি অন্যান্য দিক থেকে তাদের অবস্থা হবে এমন অন্ধের মতো যে নিজের পথ দেখতে পায় না। যার হাতে লাঠিও নেই, হাতড়ে চলার ক্ষমতাও নেই, প্রতি পদে পদে হোঁচট খাচ্ছে, বুঝতে পারছে না সে কোন দিকে যাবে এবং নিজের প্রয়োজন কিভাবে পূর্ণ করবে। নিম্নলিখিত শব্দাবলীর মাধ্যমে এ অবস্থাটিকে তুলে ধরা হয়েছে। “যেভাবে তুমি আমার আয়াতগুলো ভুলে গিয়েছিলে ঠিক তেমনিভাবে আজ তোমাকে ভুলে যাওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ তুমি কোথায় কোথায় হোচট খাচ্ছো, আঘাত পাচ্ছো এবং কেমনতর বঞ্চনার শিকার হচ্ছো আজ তার কোন পরোয়াই করা হবে না। কেউ তোমার হাত ধরবে না, তোমার অভাব ও প্রয়োজন কেউ পূর্ণ করবে না এবং তোমার কোনরকম দেখাশুনা করা হবে না। তুমি চরম উপেক্ষা, অবজ্ঞা ও বিস্মৃতির অতল তলে নিক্ষিপ্ত হবে।