এক্ষেত্রে এ সত্যটিও সামনে থাকা দরকার যে, মিসরের রাজ পরিবার ও অভিজাত শ্রেণীর ধর্ম জনগণের ধর্ম থেকে যথেষ্ট ভিন্ন ছিল। উভয়ের দেবতা ও মন্দির আলাদা ছিল। ধর্মীয় অনুষ্ঠানও এক ধরনের ছিল না। আর মৃত্যু পরের জীবনের ব্যাপারেও মিসরে যার গুরুত্ব ছিল অনেক বেশী, উভয়ের কার্যকর পদ্ধতি ও আদর্শিক পরিণাম অনেক বড় ফারাক পাওয়া যেতো। (দেখুন টয়েনবির লেখা (A Study Of History) বইয়ের ৩১-৩২ পৃষ্ঠা) তাছাড়া মিসরে ইতিপূর্বে যে ধর্মীয় বিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়েছিল তার ফলে সেখানকার জনগণের মধ্যে এমন একাধিক গ্রুপ তৈরী হয়ে গিয়েছিল যারা মুশরিকী ধর্মের তুলনায় একটি তাওহীদী ধর্মকে প্রাধান্য দিচ্ছিল অথবা দিতে পারতো। যেমন বনী ইসরাঈল এবং তাদের স্বধর্মীয় লোকেরা। এরা জনসংখ্যার প্রায় এক দশমাংশ ছিল। এছাড়াও রাষ্ট্র শক্তির সহযোগিতায় ফেরাউন আমিনোফিস বা আখনাতুন (খৃঃপূঃ ১৩৭৭-১৩৬০) যে ধর্ম বিপ্লব অনুষ্ঠান করেছিলেন তারপর তখনো পুরো দেড়শ’ বছরও অতিক্রান্ত হয়নি। এ বিপ্লবের মাধ্যমে সমস্ত উপাস্যদেরকে খতম করে একমাত্র একক উপাস্য “অতুন”কে প্রতিষ্ঠিত রাখা হয়েছিল। যদিও পরবর্তী পর্যায়ে রাষ্ট্র শক্তির জোরেই এ বিপ্লবের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল তবুও সে তার কিছু না কিছু প্রভাব রেখে গিয়েছিল। এসব অবস্থা সামনে রাখলে সে সময় ফেরাউনের মনে যে ভীতি ওআশঙ্কা জাগছিল তা পুরোপুরি অনুধাবন করা যাবে।