وَلَقَدْ خَلَقْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعَ طَرَآئِقَ وَمَا كُنَّا عَنِ ٱلْخَلْقِ غَـٰفِلِينَ
আর তোমাদের ওপর আমি সাতটি পথ নির্মাণ করেছি, ১৫ সৃষ্টিকর্ম আমার মোটেই অজানা ছিল না। ১৬
১৫
মূলে طَرَائِقَ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর মানে পথও হয় আবার স্তরও হয়। যদি প্রথম অর্থটি গ্রহণ করা হয় তাহলে সম্ভবত এর অর্থ হবে সাতটি গ্রহের আবর্তন পথ। আর যেহেতু সে যুগে মানুষ সাতটি গ্রহ সম্পর্কেই জানতো তাই সাতটি পথের কথা বলা হয়েছে। এর মানে অবশ্যই এ নয় যে এগুলো ছাড়া আর কোন পথ নেই। আর যদি দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করা হয় তাহলে سَبْعَ طَرَائِقَ এর অর্থ তাই হবে যা سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا (সাতটি আকাশ স্তরে স্তরে) এর অর্থ হয়। আর এই সঙ্গে যে বলা হয়েছে “তোমাদের ওপর” আমি সাতটি পথ নির্মাণ করেছি, এর একটি সহজ-সরল অর্থ হবে তাই যা এর বাহ্যিক শব্দগুলো থেকে বুঝা যায়। আর দ্বিতীয় অর্থটি হবে, তোমাদের চাইতে বড় জিনিস আমি নির্মাণ করেছি এ আকাশ। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছেঃ
لَخَلْقُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ أَكْبَرُ مِنْ خَلْقِ النَّاسِ
“আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করা মানুষ সৃষ্টি করার চাইতে অনেক বড় কাজ।”
(আল মু’মিন, ৫৭ আয়াত)
১৬
অন্য একটি অনুবাদ এভাবে করা যেতে পারে, “আর সৃষ্টিকূলের পক্ষ থেকে আমি গাফিল ছিলাম না অথবা নই।” মূল বাক্যে যে গ্রহণ করা হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আয়াতের অর্থ হয়ঃ এসব কিছু যা আমি বানিয়েছি এগুলো এমনি হঠাৎ কোন আনাড়ির হাত দিয়ে আন্দাজে তৈরী হয়ে যায়নি। বরং একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্ণ জ্ঞান সহকারে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আইন সক্রিয় রয়েছে। সমগ্র বিশ্বজাহানের ছোট থেকে নিয়ে বড় পর্যন্ত সবকিছুর মধ্যে একটি পূর্ণ সামঞ্জস্য রয়েছে। এ বিশাল কর্ম জগতে ও বিশ্ব-জগতের এ সুবিশাল কারখানায় সব দিকেই একটি উদ্দেশ্যমুখিতা দেখা যাচ্ছে। এসব স্রষ্টার জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রমাণ পেশ করছে। দ্বিতীয় অনুবাদটি গ্রহণ করলে এর অর্থ হবেঃ এ বিশ্ব-জাহানে আমি যা কিছুই সৃষ্টি করেছি তাদের কারোর কোন প্রয়োজন থেকে আমি কখনো গাফিল এবং কোন অবস্থা থেকে কখনো বেখবর থাকিনি। কোন জিনিসকে আমি নিজের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তৈরী হতে ও চলতে দেইনি। কোন জিনিসের প্রাকৃতিক প্রয়োজন সরবরাহ করতে আমি কখনো কুন্ঠিত হইনি। প্রত্যেকটি বিন্দু, বালুকণা ও পত্র-পল্লবের অবস্থা আমি অবগত থেকেছি।