فَذَرْهُمْ فِى غَمْرَتِهِمْ حَتَّىٰ حِينٍ
----বেশ, তাহলে ছেড়ে দাও তাদেরকে, ডুবে থাকুক নিজেদের গাফিলতির মধ্যে একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত। ৪৯
৪৯
প্রথম বাক্য ও দ্বিতীয় বাক্যের মাঝখানে একটি ফাঁক আছে। এফাঁকটি ভরে দেয়ার পরিবর্তে শ্রোতার চিন্তা-কল্পনার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কারণ ভাষণের পটভূমি নিজেই তাকে ভরে ফেলছে। এ পটভূমি হচ্ছে, আল্লাহর এক বান্দা পাঁচ ছয় বছর থেকে মানুষকে আসল দ্বীনের দিকে ডাকছেন। যুক্তির সাহায্যে তাদেরকে নিজের কথা বুঝিয়ে বলছেন। ইতিহাসেরনজীর পেশ করছেন। তার দাওয়াতের প্রভাব ও ফলাফল কার্যত চোখের সামনে আসছে। তারপর তাঁর ব্যক্তিগত চরিত্রও সাক্ষ্য দিয়ে চলছে যে, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য ও আস্তাভাজন ব্যক্তি। কিন্তু এ সত্ত্বেও লোকেরা শুধু যে বাপ-দাদাদের থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বাতিলের মধ্যে নিমগ্ন রয়েছে তা নয় এবং শুধু যে সুস্পষ্ট যুক্তি-প্রমাণ সহকারে যে সত্য পেশ করা হচ্ছে তাকে মেনে নিতেও তারা প্রস্তুত হয়নি তা নয়। বরং তারা আদাপানি খেয়ে সত্যের আহবায়কের পিছনেও লেগে যায় এবং র্তাঁর দাওয়াতকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য হঠকারিতা, অপবাদ রটনা, জুলুম, নিপীড়ন, মিথ্যাচার তথাযাবতীয় নিকৃষ্ট ধরনের কৌশল অবলম্বন করার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে থাকছে না। এহেন পরিস্থিতিতে আসল সত্য দ্বীনের একক অস্তিত্ব এবং পরবর্তীতে উদ্ভাবিত ধর্মসমূহের স্বরূপ বর্ণনা করার পর “ছেড়ে দাও তাদেরকে, ডুবে থাকুক তারা নিজেদের গাফিলতির মধ্যে” একথা স্বতস্ভূর্তভাবে এ অর্থ প্রকাশ করে যে, “ঠিক আছে, যদি এরা না মেনে নেয় এবং নিজেদের ভ্রষ্টতার মধ্যে আকন্ঠ ডুবে থাকতেচায় তাহলেএদেরকে সেভাবেই থাকতে দাও।” এই “ছেড়ে দাও”-একে একেবারেই শাব্দিক অর্থে গ্রহণ করে “এখন আর প্রচারই করো না” বলে মনে করা বাকভংগী সম্পর্কেঅজ্ঞতাইপ্রমাণ করবে। এ ধরনের অবস্থায় প্রচার ও উপদেশ দানে বিরত থাকার জন্য নয় বরং গাফিলদেরকে ঝাঁকুনি দেবার জন্য বলা হয়ে থাকে। তারপর “একটি বিশেষ সময় পর্যন্ত” শব্দগুলোর মধ্যে শব্দগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি গভীর সতর্ক সংকেত। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, এ গাফলতির মধ্যেডুবে থাকার ব্যাপারটা দীর্ঘক্ষণ চলতে পারবে না। এমন একটি সময় আসবে যখন তারা সজাগ হয়ে যাবে এবং আহবানকে যে জিনিসের দিকে আহবান করছিল তার স্বরূপ তারা উপলব্ধি করতে পারবে এবং তারা নিজেরা যে জিনিসের মধ্যে ডুবে ছিল তার সঠিক চেহারাও অনুধাবনকরতে সক্ষম হবে।