وَلَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۖ وَلَدَيْنَا كِتَـٰبٌۭ يَنطِقُ بِٱلْحَقِّ ۚ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
আমি কোন ব্যক্তির ওপর, ৫৪(ক) তার সাধ্যের বাইরে কোন দায়িত্ব অর্পণ করি না ৫৫ এবং আমার কাছে একটি কিতাব আছে যা (প্রত্যেকের অবস্থা) ঠিকমতো জানিয়ে দেয় ৫৬ আর কোনোক্রমেই লোকদের প্রতি জুলুম করা হবে না। ৫৭
৫৪(ক)
উল্লেখ্য, ৬১ আয়াতেরঅনুবাদ ৫৭ আয়াতের আগে করা হয়েছে। এখান থেকে ৬২ আয়াতেরঅনুবাদ শুরু হচ্ছে।
৫৫
এ প্রেক্ষাপটে এ বাক্যটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। একে ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করতে হবে। আগের আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে। তারা প্রকৃত কল্যাণ আহরণকারী। কারা অগ্রবর্তী হয়ে তা অর্জন করে এবং তাদের গুণাবলী কি কি। এ আলোচনার পর সঙ্গে সঙ্গেই একথা বলা হলো, আমি কখনো কাউকে তার সামর্থ্যের বাইরে কষ্ট দেই না। আর এ দাঁড়ায় যে, এ চরিত্র, নৈতিকতা ও কার্যক্রম কোন অতি মানবিক জিনিস নয়। তোমাদেরই মতো রক্ত-মাংসের মানুষেরাই এ পথে চলে দেখিয়ে দিচ্ছে। কাজেই তোমরা একথা বলতে পারো না যে, তোমাদেরকাছে এমন কোন জিনিসের দাবী জানানো হচ্ছে যা মানুষের সাধ্যের বাইরে। তোমরা যে পথে চলছো তার ওপর চলার ক্ষমতা যেমন মানুষের আছে তেমনি তোমাদের নিজেদের জাতির কতিপয় মু’মিন যে পথে চলছে তার ওপর চলার ক্ষমতাও মানুষের আছে। এখন এ দু’টি সম্ভাব্য পথের মধ্যে কে কোন্টি নির্বাচন করে, শুধুমাত্র তার ওপরই ফয়সালা নির্ভর করে। এ নির্বাচনের ক্ষেত্র ভুল করে যদি তোমরা আজ তোমাদের সমস্ত শ্রম ও প্রচেষ্টা অকল্যাণ সাধনে নিয়োজিত করো এবং কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থেকে যাও তাহলে আগামীতে নিজেদের এ বোকামির দণ্ড নিতেই হবে। সে দন্ড থেকে এ খোঁড়া অজুহাত তোমাদের বাঁচাতে পারবে না যে, কল্যাণ পর্যন্ত পৌঁছা তোমাদের সামর্থ্যের বাইরে ছিল। তখন এ অজুহাত পেশ করলে তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে, এ পথ যদি মানুষের সামর্থ্যের বাইরে থেকে থাকে তাহলে তোমাদেরই মতো অনেক মানুষ তার ওপর চলতে সক্ষমত হলো কেমন করে?
৫৬
কিতাব বলে এখানে আমলনামাকে বুঝানো হয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তির এ আমলনামা পৃথক পৃথকভাবে তৈরী হচ্ছে। তার প্রত্যেকটি কথা, প্রত্যেকটি নড়াচড়া এমনকি চিন্তা-ভাবনা ও ইচ্ছা-সংকল্পের প্রত্যেকটি অবস্থা পর্যন্ত তাতে সন্নিবেশিত হচ্ছে। এ সম্পর্কেই সূরা কাহ্ফে বলা হয়েছেঃ
-------------
“আর আমলনামা সামনে রেখে দেয়া হবে। তারপর তোমরা দেখবে অপরাধীরা তার মধ্যে যা আছে তাকে ভয় করতে থাকবে এবং বলতে থাকবে, হায়, আমাদের দুর্ভাগ্য! এ কেমন কিতাব, আমাদের ছোট বা বড় এমন কোনো কাজ নেই যা এখানে সন্নিবেশিত হয়নি। তারা যে যা কিছু করেছিল সবই নিজেদের সামনে হাজির দেখতে পাবে। আর তোমার রব কারোর প্রতি জুলুম করেন না।” (৪৯ আয়াত)
কেউ কেউ এখানে কিতাব অর্থে কুরআন গ্রহণ করে আয়াতের অর্থ উল্টে দিয়েছে।
৫৭
অর্থাৎ কারোর বিরুদ্ধে এমন কোন দোষারোপ করা হবে না যে জন্য সে মূলত দায়ী নয়। কারোর এমন কোন সৎকাজ গ্রাস করে ফেলা হবে না যার প্রতিদানের সে প্রকৃতপক্ষে হকদার। কাউকে অনর্থক শাস্তি দেয়া হবে না। কাউকে সত্য অনুযায়ী যথার্থ পুরস্কার থেকে বঞ্চিত রাখা যাবে না।