أَفِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ أَمِ ٱرْتَابُوٓا۟ أَمْ يَخَافُونَ أَن يَحِيفَ ٱللَّهُ عَلَيْهِمْ وَرَسُولُهُۥ ۚ بَلْ أُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ
তাদের মনে কি (মুনাফিকীর) রোগ আছে? না তারা সন্দেহের শিকার হয়েছে? না তারা ভয় করছে আল্লাহ ও তাঁর রসূল তাদের প্রতি যুলুম করবেন? আসলে তারা নিজেরাই যালেম। ৮০
৮০
অর্থাৎ মানুষের এ কর্মনীতি অবলম্বনের পেছনে তিনটি সম্ভাব্য কারণই থাকতে পারে। এক, যে মানুষটি ঈমানের দাবীদার সে আসলে ঈমানই আনেনি এবং মুনাফিকী পদ্ধতিতে নিছক ধোঁকা দেবার এবং মুসলিম সমাজে প্রবেশ করে অবৈধ স্বার্থলাভের জন্য মুসলমান হয়েছে। দুই, ঈমান আনা সত্ত্বেও তার মনে এ মর্মে সন্দেহ রয়ে গেছে যে, রসূল আসলে আল্লাহর রসূল কি না, কুরআন আল্লাহর কিতাব কি না এবং কেয়ামত সত্যি সত্যিই অনুষ্ঠিত হবে কি না অথবা এগুলো সবই নিছক মুখরোচক গালপল্প বরং আসলে আল্লাহর অস্তিত্ব আছে কি অথবা এটাও নিছক একটা কল্পনা, কোন বিশেষ স্বার্থোদ্বারের উদ্দেশ্যে এ কাল্পনিক বিষয়টি তৈরী করে নেয়া হয়েছে। তিন, সে আল্লাহকে আল্লাহ এবং রসূলকে রসূল বলে মেনে নেবার পরও তাঁদের পক্ষ থেকে জুলুমের আশঙ্কা করে। সে মনে করে আল্লাহর কিতাব অমুক হুকুমটি দিয়ে তো আমাদের বিপদে ফেলে দিয়েছে এবং আল্লাহর রসূলের অমুক উক্তি বা অমুক পদ্ধতি আমাদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এ তিনটি কারণের মধ্যে যেটিই সত্য হোক না কেন, মোটকথা এ ধরনের লোকদের জালেম হবার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। এ ধরনের চিন্তা সহকারে যে ব্যক্তি মুসলমানদের দলভুক্ত হয়, ঈমানের দাবী করে এবং মুসলিম সমাজের একজন সদস্য সেজে এ সমাজ থেকে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ স্বার্থ হাসিল করতে থাকে, সে একজন বড় দাগাবাজ, বিশ্বাসঘাতক, খেয়ানতকারী ও জালিয়াত। সে নিজের ওপরও জুলুম করে। রাত-দিন মিথ্যাচারের মাধ্যমে নিজেকে সে সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্বভাবের মানুষে পরিণত করতে থাকে। সে এমন ধরনের মুসলমানদের প্রতিও যুলুম করে যারা তার বাহ্যিক কালেমায়ে শাহাদাত পাঠের ওপর নির্ভর করে তাকে এ মিল্লাতের এটি অংশ বলে মেনে নেয় এবং তারপর তার সাথে নানান ধরনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।