وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ فَيَقُولُ ءَأَنتُمْ أَضْلَلْتُمْ عِبَادِى هَـٰٓؤُلَآءِ أَمْ هُمْ ضَلُّوا۟ ٱلسَّبِيلَ
আর সেদিনই (তোমার রব) তাদেরও ঘিরে আনবেন এবং তাদের উপাস্যদেরও ২৪ আল্লাহকে বাদ দিয়ে আজ তারা যাদের পূজা করছে। তারপর তিনি তাদের জিজ্ঞেস করবেন, “তোমরা কি আমার এ বান্দাদের গোমরাহ করেছিলে? অথবা এরা নিজেরাই সহজ সরল সত্য পথ থেকে বিচ্যূত হয়ে পড়েছিল?” ২৫
২৪
সামনের দিকের আলোচনা স্বতই প্রকাশ করছে যে, এখানে উপাস্য বলতে মূর্তি নয় বরং ফেরেশতা, নবী, রসূল, শহীদ ও সৎলোকদেরকে বুঝানো হয়েছে। বিভিন্ন জাতির মুশরিক সম্প্রদায় তাদেরকে উপাস্যে পরিণত করে রেখেছে। আপতদৃষ্টিতে এক ব্যক্তি وَمَا يَعْبُدُونَ
শব্দাবলী পড়ে এর অর্থ মূর্তি বলে মনে করে। কেননা, আরবী ভাষায় সাধারণত ما
শব্দটি নিষ্প্রাণ ও নির্বোধ জীবের জন্য এবং من শব্দটি বুদ্ধিমান জীবের জন্য বলা হয়ে থাকে। আমরা যেমন অনেক সময় কোন মানুষ সম্পর্কে তাচ্ছিল্যভরে বলি “সে কি” এবং এ থেকে এ অর্থ গ্রহণ করি যে, তার কোন সামান্যতমও মর্যাদা নেই, সে কোন বিরাট বড় ব্যক্তিত্ব নয়। ঠিক আরবী ভাষাতেও তেমনি বলা হয়ে থাকে। যেহেতু আল্লাহর মোকাবিলায় তাঁর সৃষ্টিকে উপাস্যে পরিণত করার ব্যাপার এখানে বক্তব্য আসছে তাই ফেরেশতাদের ও বড় বড় মনীষীদের মর্যাদা যতই উচ্চতর হোক না কেন আল্লাহর মোকাবিলায় তা যেন কিছুই নয়। এজন্যই পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে এখানে
من
এর পরিবর্তে ما শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
২৫
কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়বস্তুটি এসেছে। যেমন সূরা সাবার ৪০-৪১ আয়াতে বলা হয়েছেঃ
وَيَوْمَ يَحْشُرُهُمْ جَمِيعًا ثُمَّ يَقُولُ لِلْمَلَائِكَةِ أَهَؤُلَاءِ إِيَّاكُمْ كَانُوا يَعْبُدُونَ - قَالُوا سُبْحَانَكَ أَنْتَ وَلِيُّنَا مِنْ دُونِهِمْ بَلْ كَانُوا يَعْبُدُونَ الْجِنَّ أَكْثَرُهُمْ بِهِمْ مُؤْمِنُونَ
“যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্র করবেন তারপর ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করবেন, এরা কি তোমাদেরই বন্দেগী করতো? তারা বলবেঃ পাক-পবিত্র আপনার সত্তা, আমাদের সম্পর্ক তো আপনার সাথে, এদের সাথে নয়। এরা তো জিনদের (অর্থাৎ শয়তান) ইবাদাত করতো। এদের অধিকাংশই তাদের প্রতিই ঈমান এনেছিল।”অনুরূপভাবে সূরা মায়েদার শেষ রুকূ’তে বলা হয়েছেঃ
وَإِذْ قَالَ اللَّهُ يَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ أَأَنْتَ قُلْتَ لِلنَّاسِ اتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَهَيْنِ مِنْ دُونِ اللَّهِ قَالَ سُبْحَانَكَ مَا يَكُونُ لِي أَنْ أَقُولَ مَا لَيْسَ لِي بِحَقٍّ ....................................مَا قُلْتُ لَهُمْ إِلَّا مَا أَمَرْتَنِي بِهِ أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمْ
“আর যখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, হে মারয়ামের ছেলে ঈসা! তুমি কি লোকদের বলেছিলে তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমাকে ও আমার মাকে উপাস্যে পরিণত করো? সে বলবে, পাক-পবিত্র আপনার সত্তা, যে কথা বলার অধিকার আমার নেই তা বলা আমার জন্য কবে শোভন ছিল? ........ আমি তো এদেরকে এমন সব কথা বলেছিলাম যা বলার হুকুম আপনি আমাকে দিয়েছিলেন, তা হচ্ছে এই যে, আল্লাহর বন্দেগী করো, যিনি আমার রব এবং তোমাদেরও রব।” (দেখুন-সূরা আল মায়েদা, ১১৬ ও ১১৭)