وَاذْكُرُوا إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَاءَ مِنْ بَعْدِ قَوْمِ نُوحٍ
“স্মরণ করো (আল্লাহর অনুগ্রহ ও দানের কথা) তিনি নূহের জাতির পরে তোমাদেরকে খলীফা তথা প্রতিনিধি নিয়োগ করেন।” (সূরা আল আ’রাফ ৬৯ আয়াত)
শারীরিক দিক দিয়ে তারা ছিল অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান ও বলিষ্ঠ জাতি।
وَزَادَكُمْ فِي الْخَلْقِ بَسْطَةً
“আর শারীরিক গঠন শৈলীতে তোমাদেরকে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করি।” (আল আ’রাফ ৬৯ আয়াত)
সেকালে তারা ছিল নজিরবিহীন জাতি। তাদের সমকক্ষ অন্য কোন জাতিই ছিল নাঃ
الَّتِي لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِي الْبِلَادِ
“তাদের সমকক্ষ কোন জাতি দেশে সৃষ্টি করা হয়নি।” (আল ফজর, ৮ আয়াত)
তাদের সভ্যতা ছিল বড়ই উন্নত ও গৌরবোজ্জ্বল। সুউচ্চ ইমারত নির্মাণ করা ছিল তাদের বৈশিষ্ট্য এবং এজন্য তদানীন্তন বিশ্বে তারা প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলঃ
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ – إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ
“তুমি কি দেখোনি তোমাদের রব কি করেছেন সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী ইরমের আদদের সাথে?” (আল ফজরঃ ৬-৭ আয়াত)
এ বস্তুগত উন্নতি ও শারীরিক শক্তি তাদেরকে অহংকারী করে দিয়েছিল এবং নিজেদের শক্তির গর্বে তারা মত্ত হয়ে উঠেছিলঃ
فَأَمَّا عَادٌ فَاسْتَكْبَرُوا فِي الْأَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَقَالُوا مَنْ أَشَدُّ مِنَّا قُوَّةً
“আর আদ জাতি, তারা তো পৃথিবীতে সত্যের পথ থেকে সরে গিয়ে অহংকার করতে থাকে এবং বলতে থাকে, কে আছে আমাদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী?” (হা-মীম আস্ সাজদাহ ১৫ আয়াত)
তাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল কয়েকজন বড় বড় জালেম একনায়কের হাতে। তাদের সামনে কেউ ‘টু’ শব্দটিও পর্যন্ত করতে পারতো নাঃ
وَاتَّبَعُوا أَمْرَ كُلِّ جَبَّارٍ عَنِيدٍ
“আর তারা প্রত্যেক সত্যের দুশমন জালেম একনায়কের হুকুম পালন করে।” (হূদ, ৫৯ আয়াত)
ধর্মীয় দিক থেকে তারা আল্লাহর অস্তিত্ব স্বীকার করতো না বরং শিরকে লিপ্ত ছিল। বন্দেগী একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত হওয়া উচিত, একথা তারা অস্বীকার করতোঃ
قَالُوا أَجِئْتَنَا لِنَعْبُدَ اللَّهَ وَحْدَهُ وَنَذَرَ مَا كَانَ يَعْبُدُ آبَاؤُنَا
“তারা (হূদ আলাইহিস সালামকে) বললো, তুমি কি আমাদের কাছে এজন্য এসেছো যে, আমরা একমাত্র আল্লাহর বন্দেগী করবো এবং আমাদের বাপ-দাদারা যাদের ইবাদাত করতো তাদেরকে বাদ দেবো?” (আল আ’রাফ, ৭০ আয়াত)
এ বৈশিষ্ট্যগুলো সামনে রাখলে হযরত হূদের দাওয়াতের এ ভাষণ ভালোভাবে অনুধাবন করা যেতে পারে।