قَالَتْ إِنَّ ٱلْمُلُوكَ إِذَا دَخَلُوا۟ قَرْيَةً أَفْسَدُوهَا وَجَعَلُوٓا۟ أَعِزَّةَ أَهْلِهَآ أَذِلَّةًۭ ۖ وَكَذَٰلِكَ يَفْعَلُونَ
রাণী বললো, কোন বাদশাহ যখন কোন দেশে ঢুকে পড়ে তখন তাকে বিপর্যস্ত করে এবং সেখানকার মর্যাদাশালীদের লাঞ্ছিত করে ৩৯ এ রকম কাজ করাই তাদের রীতি। ৪০
৩৯
এ একটি বাক্যের মাধ্যমে রাজতন্ত্র এবং তার প্রভাব ও ফলাফলের ওপর পূর্ণাংগ মন্তব্য করা হয়েছে। রাজ-রাজড়াদের দেশ জয় এবং বিজেতা জাতি কর্তৃক অন্য জাতির ওপর হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্ব কখনো সংশোধন ও মঙ্গলাকাংখ্যার উদ্দেশ্যে হয় না। এর উদ্দেশ্য হয়, অন্য জাতিকে আল্লাহ যে রিযিক এবং উপায়-উপকরণ দিয়েছেন তা থেকে নিজেরা লাভবান হওয়া এবং সংশ্লিষ্ট জাতিকে এতটা ক্ষমতাহীন করে দেয়া যার ফলে সে আর কখনো মাথা উঁচু করে নিজের অংশটুকু চাইতে না পারে। এ উদ্দেশ্যে সে তার সমৃদ্ধি, শক্তি ও মর্যাদার যাবতীয় উপায়-উপকরণ খতম করে দেয়। তার যেসব লোকের মধ্যে আত্ম-মর্যাদাবোধের লেশমাত্র সঞ্জীবিত থাকে তাদেরকে দলিত মথিত করে। তার লোকদের মধ্যে তোষামোদ প্রিয়তা পরস্পরের মধ্যে হানাহানি, কাটাকাটি, একে অন্যের গোয়েন্দাগিরি করা, বিজয়ী শক্তির অন্ধ অনুকরণ করা, নিজের সভ্যতা-সংস্কৃতিকে হেয় মনে করা, হানাদারদের সভ্যতা-সংস্কৃতিকে গোলামী দান করা এবং এমনিতর অন্যান্য নীচ ও ঘৃণিত গুণাবলী সৃষ্টি করে দেয়। এ সঙ্গে তাদেরকে এমন স্বভাবের অধিকারী করে তোলে যার ফলে তারা নিজেদের পবিত্রতম জিনিসও বিক্রি করে দিতে ইতস্তত করে না এবং পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যাবতীয় ঘৃণিত কাজ করে দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়।
৪০
এ বাক্যাংশের বক্তা কে, সে ব্যাপারে দু’টি সমান সমান সম্ভাবনা রয়েছে। একটি হচ্ছে, এটি সাবার রাণীরই উক্তি এবং তিনি তাঁর পূর্বের উক্তিটির ওপর জোর দিয়ে এটুকু সংযোজন করেন। দ্বিতীয় সম্ভাবনাটি হচ্ছে, এটি মহান আল্লাহরই উক্তি। রাণীর বক্তব্য সমর্থন করার জন্য প্রাসঙ্গিক বাক্য হিসেবে তিনি একথা বলেন।