قَالَ يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَؤُا۟ أَيُّكُمْ يَأْتِينِى بِعَرْشِهَا قَبْلَ أَن يَأْتُونِى مُسْلِمِينَ
সুলাইমান বললো, ৪৩ “হে সভাসদগণ! তারা অনুগত হয়ে আমার কাছে আসার আগে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমার কাছে নিয়ে আসতে পারে?” ৪৪
৪৩
মাঝখানের ঘটনা উহ্য রাখা হয়েছে। অর্থাৎ সাবার রাণীর দূত তার উপঢৌকন ফেরত নিয়ে দেশে পৌঁছে গেল এবং যা কিছু সে শুনেছিল ও দেখেছিল সব আনুপূর্বিক বর্ণনা করলো। রাণী তার কাছ থেকে হযরত সুলাইমান (আ) সম্পর্কে যা শুনলেন তা থেকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন যে, তাঁর সাথে সাক্ষাত করার জন্য তিনি নিজেই বাইতুল মাকদিসে যাবেন। কাজেই তিনি রাজকীয় জৌলুশ ও সাজ-সরঞ্জাম সহকারে ফিলিস্তিনের পথে রওয়ানা হয়ে গেলেন এবং হযরত সুলাইমানের দরবারে খবর পাঠালেন এই বলেঃ আপনার দাওয়াত আপনার মুখে শুনার এবং সরাসরি আপনার সাথে আলোচনা করার জন্য আমি নিজেই আসছি। এসব বিস্তারিত ঘটনা বাদ দিয়ে এখন শুধুমাত্র রাণী যখন বাইতুল মাকদিসের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং তার মাত্র এক-দু’দিনের পথ বাকি ছিল তখনকার ঘটনা বর্ণনা করা হচ্ছে।
৪৪
অর্থাৎ সেই সিংহাসনটি যে সম্পর্কে হুদহুদ পাখি বলেছিল যে, “তাঁর সিংহাসনটি বড়ই জমকালো।” কোন কোন মুফাসসির রাণীর আগমনের পূর্বে তাঁর সিংহাসন উঠিয়ে নিয়ে আসার কারণ হিসেবে এরূপ অদ্ভূত উক্তি করেছেন যে, হযরত সুলাইমান এটি দখল করে নিতে চাচ্ছিলেন এবং তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, রাণী যদি ইসলাম গ্রহণ করে বসেন, তাহলে তাঁর সম্পদ তাঁর ইচ্ছা ও সন্তুষ্টি ছাড়া দখল করা হারাম হয়ে যাবে। তাই তিনি তাঁর আসার আগেই সাত তাড়াতাড়ি তাঁর সিংহাসনটি নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। আসতাগ্ ফিরুল্লাহ্ একজন নবীর নিয়ত সম্পর্কে এরূপ ধারণা করা বড়ই বিস্ময়কর মনে হয়। একথা মনে করা হয় না কেন যে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম ইসলাম প্রচারের সাথে সাথে রাণী ও তার সভাসদদেরকে একটি মু’জিযাও দেখাতে চাচ্ছিলেন? এভাবে তারা জানতে পারতো, আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁর নবীদেরকে কেমন সব অস্বাভাবিক শক্তি দান করেন এবং এভাবে তারা নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পারতো যে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম যথার্থই আল্লাহর নবী। কোন কোন আধুনিক তাফসীরকার এর চেয়েও মারাত্মক অশালীন ও অনাকাংখিত কথা বলেছেন। তারা আয়াতের তরজমা এভাবে করেছেনঃ “তোমাদের মধ্য থেকে কে আমাকে রাণীর জন্য একটি সিংহাসন এনে দেবে?” অথচ কুরআন يَأْتِينِي بِعَرْشِ لها
নয় বরং بِعَرْشِهَا বলছে। এর অর্থ হচ্ছে, “তার সিংহাসন, তার জন্য একটি সিংহাসন নয়। হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম যেহেতু রাণীরই সিংহাসন ইয়ামন থেকে উঠিয়ে বাইতুল মাকদিসে নিয়ে আসতে চাচ্ছিলেন এবং তাও আবার রাণীর এসে পড়ার আগেভাগেই, শুধুমাত্র এ কারণে এ ধরণের মনগড়া কথা তৈরি করা হয়েছে আর যে কোনভাবে কুরআনের বর্ণনাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়াই ছিল এর উদ্দেশ্য।