فَلَمَّا جَآءَهُم مُّوسَىٰ بِـَٔايَـٰتِنَا بَيِّنَـٰتٍۢ قَالُوا۟ مَا هَـٰذَآ إِلَّا سِحْرٌۭ مُّفْتَرًۭى وَمَا سَمِعْنَا بِهَـٰذَا فِىٓ ءَابَآئِنَا ٱلْأَوَّلِينَ
তারপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে পৌঁছলো তখন তারা বললো, এসব বানোয়াট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়। ৪৯ আর এসব কথা তো আমরা আমাদের বাপ দাদার কালে কখনো শুনিনি। ৫০
৪৯
মূলে বলা হয়েছে سِحْرٌ مُفْتَرًى “বানোয়াট যাদু।” এ বানোয়াটকে যদি মিথ্যা অর্থে ধরা হয় তাহলে এর অর্থ হবে, এ লাঠির সাপে পরিণত হওয়া এবং হাতের ঔজ্জ্বল্য বিকীরণ করা মূল জিনিসের প্রকৃত পরিবর্তন নয় বরং এটা হচ্ছে নিছক একটি লোক দেখানো প্রতারণামূলক কৌশল, একে মু’জিযা বলে এ ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দিচ্ছে। আর যদি একে বানোয়াট অর্থে গ্রহণ করা হয়, তাহলে এর অর্থ হবে, এ ব্যক্তি কোন কৌশল অবলম্বন করে এমন একটি জিনিস তৈরী করে এনেছে, যা দেখতে লাঠির মতো কিন্তু যখন সে সেটাকে ছুঁড়ে দেয় তখন সাপের মতো দেখায়। আর নিজের হাতেও সে এমন কিছু জিনিস মাখিয়ে নিয়েছে যার ফলে তা বগল থেকে বের হবার পর হঠাৎ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এ কৃত্রিম যাদু সে নিজেই তৈরী করেছে কিন্তু আমাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছে এ বলে যে, এটি আল্লাহ প্রদত্ত একটি মু’জিযা।
৫০
রিসালাতের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হযরত মূসা যেসব কথা বলেছিলেন সে দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কুরআনের অন্যান্য জায়গায় এগুলোর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। আন-নাযি’আতে বলা হয়েছে, মূসা তাকে বলেনঃ
هَلْ لَكَ إِلَى أَنْ تَزَكَّى - وَأَهْدِيَكَ إِلَى رَبِّكَ فَتَخْشَى
“তুমি কি পবিত্র-পরিচ্ছন্ন নীতি অবলম্বন করতে আগ্রহী? এবং আমি তোমাকে তোমার রবের পথ বাতলে দিলে কি তুমি ভীত হবে?” (আন-নাযিয়াত-১৮-১৯)
সূরা ত্বআ-হায়ে বলা হয়েছেঃ
قَدْ جِئْنَاكَ بِآيَةٍ مِنْ رَبِّكَ وَالسَّلَامُ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى - إِنَّا قَدْ أُوحِيَ إِلَيْنَا أَنَّ الْعَذَابَ عَلَى مَنْ كَذَّبَ وَتَوَلَّى-(طه-47-48)
“আমরা তোমার কাছে তোমার প্রতিপালকের কাছ থেকে নিদর্শন নিয়ে এসেছি। আর যে ব্যক্তি সঠিক পথের অনুসারী হয় তার জন্য রয়েছে শান্তি ও নিরাপত্তা। আমাদের প্রতি অহী নাযিল করা হয়েছে এ মর্মে যে, শাস্তি তার জন্য যে মিথ্যা আরোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।” আর
إِنَّا رَسُولَا رَبِّكَ فَأَرْسِلْ مَعَنَا بَنِي إِسْرَائِيلَ “আমরা তোমার রবের পয়গম্বর, তুমি বনী ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও।” একথাগুলো সম্পর্কেই ফেরাউন বলে, আমাদের বাপ-দাদারাও কখনো একথা শোনেনি যে, মিসরের ফেরাউনের উপরেও কোন কর্তৃত্বশালী সত্তা আছে, যে তাকে হুকুম করার ক্ষমতা রাখে, তাকে শাস্তি দিতে পারে, তাকে নির্দেশ দেবার জন্য কোন লোককে তার দরবারে পাঠাতে পারে এবং ভয় করার জন্য মিসরের বাদশাহকে উপদেশ দেয়া যেতে পারে। এ সম্পূর্ণ অভিনব কথা আমরা আজ এক ব্যক্তির মুখে শুনছি।