إِنَّمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَوْثَـٰنًۭا وَتَخْلُقُونَ إِفْكًا ۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ تَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ لَا يَمْلِكُونَ لَكُمْ رِزْقًۭا فَٱبْتَغُوا۟ عِندَ ٱللَّهِ ٱلرِّزْقَ وَٱعْبُدُوهُ وَٱشْكُرُوا۟ لَهُۥٓ ۖ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে পূজা করছো তারা তো নিছক মূর্তি আর তোমরা একটি মিথ্যা তৈরি করছো। ২৮ আসলে আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তোমরা পূজা করো তারা তোমাদের কোন রিযিকও দেবার ক্ষমতা রাখে না, আল্লাহর কাছে রিযিক চাও, তাঁরই বন্দেগী করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তারই দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে। ২৯
২৮
অর্থাৎ তোমরা এ মূর্তি তৈরি করছো না বরং মিথ্যা তৈরি করছো। এ মূর্তিগুলোর অস্তিত্ব নিজেই একটি মূর্তিমান মিথ্যা। তার ওপর তোমাদের এ আকীদা-বিশ্বাস যে, এরা দেব-দেবী, আল্লাহর অবতার, তাঁর সন্তান, আল্লাহর সান্নিধ্যে অবস্থানকারী ও তাঁর কাছে শাফা’আতকারী অথবা এদের মধ্য থেকে কেউ রোগ নিরাময়কারী আবার কেউ সন্তান-দাতা এবং কেউ রিযিকদাতা-এসবই মিথ্যা কথা। তোমরা নিজেদের ধারণা ও কল্পনার মাধ্যমে এসব রচনা করেছো। আসল সত্য এছাড়া আর কিছুই নয় যে, এগুলো নিছক হাতে গড়া নিষ্প্রাণ মূর্তি এবং এদের কোন ক্ষমতা ও প্রভাব নেই।
২৯
এ কয়েকটি বাক্যেও মধ্যে হযরত ইবরাহীম (আ) মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে সমস্ত যুক্তি একত্র করেছেন। কাউকে মাবুদ বা আরাধ্য করতে হলে এ জন্য যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হবে। একটি যুক্তিসঙ্গত কারণ এ হতে পারে, তার নিজের সত্তার মধ্যে মাবুদ হবার কোন অধিকার থাকে। দ্বিতীয় কারণ হতে পারে, সে মানুষের স্রষ্টা এবং মানুষ নিজের অস্তিত্বের জন্য তার কাছে অনুগৃহীত। তৃতীয় কারণ হতে পারে, সে মানুষের লালন-পালনের ব্যবস্থা করে। তাকে রিযিক তথা জীবন ধারণের উপকরণ সরবরাহ করে। চতুর্থ কারণ হতে পারে, মানুষের ভবিষ্যত তার অনুগ্রহের ওপর নির্ভরশীল এবং মানুষ আশঙ্কা করে তার অসন্তুষ্টি অর্জন করলে তার নিজের পরিণাম অশুভ হবে। হযরত ইবরাহীম বলেন, এ চারটি কারণের কোন একটিও মূর্তি পূজার পক্ষে নয়। বরং এর প্রত্যেকটিই নির্ভেজাল আল্লাহর প্রতি আনুগত্যেও দাবী কর। “এ নিছক মূর্তিপূজা” বলে তিনি প্রথম কারণটিকে বিলুপ্ত করে দেন। কারণ নিছক মূর্তি মাবুদ হবার ব্যক্তিগত কি অধিকার বিলুপ্ত করেন। তারপর “তোমরা তাদের স্রষ্টা” একথা বলে দ্বিতীয় কারণটিকে বিলুপ্ত করেন। এরপর তারা তোমাদের কোনো প্রকারের কোন রিযিক দান করতে পারে না, একথা বলে তৃতীয় কারণটিকে বিলুপ্ত করেন। আর সবশেষে বলেন, তোমাদের তো আল্লাহর দিকে ফিরে যেতেই হবে, এ মূর্তিগুলোর দিকে ফিরে যেতে হবে না। কাজেই তোমাদের পরিণাম ও পরকালকে সমৃদ্ধ বা ধ্বংস করার ক্ষমতাও এদের নেই। এ ক্ষমতা আছে একমাত্র আল্লাহর হাতে। এভাবে শিরককে পুরোপুরি বাতিল করে দিয়ে তিনি তাদের ওপর একথা সুস্পষ্ট করে দেন যে, মানুষ যে সমস্ত কারণে কাউকে মাবুদ বা আরাধ্য গণ্য করতে পারে তার কোনটাই এক ও লা-শারীক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ইবাদাত করার দাবী করে না।