ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُمْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ
“আহ্বান করো নিজের রবের পথের দিকে প্রজ্ঞা ও উৎকৃষ্ট উপদেশের মাধ্যমে এবং লোকদের সাথে উত্তম পদ্ধতিতে বিতর্ক-আলোচনা করো।” (আন নাহল-১২৫)
وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ
“সুকৃতি ও দুষ্কৃতি সমান নয়। (বিরোধীদের আক্রমণ) প্রতিরোধ করো উৎকৃষ্ট পদ্ধতিতে। তুমি দেখবে এমন এক ব্যক্তি যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল সে এমন হয়ে গেছে যেমন তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।” (হা-মীম আস সাজদাহ ৩৪)
ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ السَّيِّئَةَ نَحْنُ أَعْلَمُ بِمَا يَصِفُونَ
“তুমি উত্তম পদ্ধতিতে দুষ্কৃতি নির্মূল করো। আমি জানি (তোমার বিরুদ্ধে) তারা যেসব কিছু তৈরি করে।” (আল মু’মিনুন ৯৬)
خُذِ الْعَفْوَ وَأْمُرْ بِالْعُرْفِ وَأَعْرِضْ عَنِ الْجَاهِلِينَ - وَإِمَّا يَنْزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ
“ক্ষমার পথ অবলম্বন করো, ভালো কাজ করার নির্দেশ দাও এবং মূর্খদেরকে এড়িয়ে চলো। আর যদি (মুখে মুখে জবাব দেবার জন্য) শয়তান তোমাকে উসকানী দেয় তাহলে আল্লাহর আশ্রয় চাও।” (আল আ’রাফ ১৯৯-২০০)
এ প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে, আহলি কিতাব আরবের মুশরিকদের মতো অহী, রিসালাত ও তাওহীদ অস্বীকারকারী ছিল না। বরং তারা মুসলমানদের মতো এ সত্যগুলো স্বীকার করতো। এ মৌলিক বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করার পর যদি তাদের মধ্যে মতবিরোধের বড় কোন ভিত্তি হতে পারতো তাহলে তা হতো এই যে, তাদের কাছে যেসব আসমানী কিতাব এসেছে মুসলমানরা সেগুলো মানছে না এবং মুসলমানদের নিজেদের কাছে যে আসমানী কিতাব এসেছে তাদেরকে তার প্রতি ঈমান আনার দাওয়াত দিচ্ছে আর তা গ্রহণ না করলে তাদেরকে কাফের বলে গণ্য করছে। বিরোধের জন্য এটি খুবই শক্তিশালী ভিত্তি হতে পারতো। কিন্তু মুসলমানদের অবস্থান ছিল এ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আহলি কিতাবের কাছে যেসব কিতাব ছিল সেসবকেই তারা সত্য বলে মানতো এবং এ সঙ্গে মুহাম্মাদ ﷺ এর প্রতি যে অহী নাযিল হয়েছিল তার প্রতি তারা ঈমান এনেছিল। এরপর কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে আহলি কিতাব এক আল্লাহরই নাযিল করা একটি কিতাব মানে এবং অন্যটি মানে না একথা বলার দায়িত্ব ছিল তাদের নিজেদেরই। এ জন্য আল্লাহ এখানে মুসলমানদের নির্দেশ দিয়েছেন, যখনই আহলি কিতাবদের মুখোমুখি হবে সবার আগে তাদের কাছে ইতিবাচকভাবে নিজেদের এ অবস্থানটি তুলে ধরো। তাদেরকে বলো, তোমরা যে আল্লাহকে মানো আমরাও তাকেই মানি এবং আমরা তার হুকুম পালন করি। তার পক্ষ থেকে যে বিধান, নির্দেশ ও শিক্ষাবলীই এসেছে, তা তোমাদের ওখানে বা আমাদের এখানে যেখানেই আসুক না কেন, সেসবের সামনে আমরা মাথা নত করে দেই। আমরা তো হুকুমের দাস। দেশ, জাতি ও বংশের দাস নই। আল্লাহর হুকুম এক জায়গায় এলে আমরা মেনে নেবো এবং এই একই আল্লাহর হুকুম অন্য জায়গায় এলে আমরা তা মানবো না, এটা আমাদের রীতি নয়। একথা কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বার বার বলা হয়েছে। বিশেষ করে আহলি কিতাবের সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে তো জোর দিয়ে এ বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন দেখুন, সূরা আল বাকারার ৪, ১৩৬, ১৭৭; আল ইমরানের ৮৪; আন নিসার ১৩৬, ১৫০-১৫২, ১৬২-১৬৪ এবং আশ শু’আরার ১৩ আয়াত।