এ আয়াতে দু’টি জিনিসের কথা বলা হয়েছে। এক, আল্লাহর আয়াত, দুই, হিকমাত বা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। আল্লাহর আয়াত অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কিতাবের আয়াত। কিন্তু হিকমাত শব্দটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক। সকল প্রকার জ্ঞানের কথা এর অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো নবী ﷺ লোকদেরকে শেখাতেন। আল্লাহর কিতাবের শিক্ষার ওপরও এ শব্দটি প্রযোজ্য হতে পারে। কিন্তু কেবলমাত্র তার মধ্যেই একে সীমিত করে দেবার সপক্ষে কোন প্রমাণ নেই। কুরআনের আয়াত শুনানো ছাড়াও নবী ﷺ নিজের পবিত্র জীবন ও নৈতিক চরিত্র এবং নিজের কথার মাধ্যমে যে হিকমাতের শিক্ষা দিতেন তাও অপরিহার্যভাবে এর অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ কেবলমাত্র এরই ভিত্তিতে যে আয়াতে مَا يُتْلَى (যা তেলাওয়াত করা হয়) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, এ দাবী করেন যে আল্লাহর আয়াত ও হিকমাত মানে হচ্ছে কেবলমাত্র কুরআন। কারণ “তেলাওয়াত” শব্দটি একমাত্র কুরআন তেলাওয়াতের সাথেই সংশ্লিষ্ট। কিন্তু এ যুক্তি একবারেই ভ্রান্ত। তেলওয়াত শব্দটি পারিভাষিকভাবে একমাত্র কুরআন বা আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট করে দেয়া পরবর্তীকালের লোকদের কাজ। কুরআনে এ শব্দটিকে পারিভাষিক অর্থে ব্যবহার করা হয়নি। সূরা বাকারার ১০২ আয়াতে এ শব্দটিকেই যাদুমন্ত্রের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। শয়তানরা হযরত সুলাইমানের নামের সাথে জড়িত করে এ মন্ত্রগুলো লোকদেরকে তেলাওয়াত করে শুনাতোঃ
وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُو الشَّيَاطِينُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ
“তারা অনুসরণ করে এমন এক জিনিসের যা তেলাওয়াত করতো অর্থাৎ যা শুনাতো শয়তানরা সুলাইমানের বাদশাহীর সাথে জড়িত করে”--থেকে স্পষ্টত প্রমাণিত হয়, কুরআন এ শব্দটিকে এর শাব্দিক অর্থে ব্যবহার করে। আল্লাহর কিতাবের আয়াত শুনাবার জন্য পারিভাষিকভাবে এক নির্দিষ্ট করে না।