ٱدْعُوهُمْ لِـَٔابَآئِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِندَ ٱللَّهِ ۚ فَإِن لَّمْ تَعْلَمُوٓا۟ ءَابَآءَهُمْ فَإِخْوَٰنُكُمْ فِى ٱلدِّينِ وَمَوَٰلِيكُمْ ۚ وَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌۭ فِيمَآ أَخْطَأْتُم بِهِۦ وَلَـٰكِن مَّا تَعَمَّدَتْ قُلُوبُكُمْ ۚ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًۭا رَّحِيمًا
পালক পুত্রদেরকে তাদের পিতার সাথে সম্পর্কিত করে ডাকো। এটি আল্লাহর কাছে বেশী ন্যায়সঙ্গত কথা। ৮ আর যদি তোমরা তাদের পিতৃ পরিচয় না জানো, তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনী ভাই এবং বন্ধু। ৯ না জেনে যে কথা তোমরা বলো সেজন্য তোমাদের পাকড়াও করা হবে না, কিন্তু তোমরা অন্তরে যে সংকল্প করো সেজন্য অবশ্যই পাকড়াও হবে। ১০ আল্লাহ ক্ষমাকারী ও দয়াময়। ১১
৮
এ হুকুমটি পালন করার জন্য সর্বপ্রথম যে সংশোধনমূলক কাজটি করা হয় সেটি হচ্ছে এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পালক পুত্র হযরত যায়েদকে (রা.) যায়েদ ইবনে মুহাম্মাদ বলার পরিবর্তে তাঁর প্রকৃত পিতার সাথে সম্পর্কিত করে যায়েদ ইবনে হারেসাহ বলা শুরু করা হয়। বুখারী, মুসলিম, তিরমিযি ও নাসাঈ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন যে, যায়েদ ইবনে হারেসাকে প্রথমে সবাই যায়েদ ইবনে মুহাম্মাদ বলতো। এ আয়াত নাযিল হবার পর তাঁকে যায়েদ ইবনে হারেসাহ বলা হতে থাকে। তাছাড়া এ আয়াতটি নাযিল হবার পর কোন ব্যক্তি নিজের আসল বাপ ছাড়া অন্য কারো সাথে পিতৃ সম্পর্ক স্থাপন করাকে হারাম গণ্য করা হয়। বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাসের (রা.) রেওয়ায়াত উদ্ধৃত করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, নবী করীম ﷺ বলেছেনঃ
مَنِ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ
“যে ব্যক্তি নিজেকে আপন পিতা ছাড়া অন্য কারো পুত্র বলে দাবী করে, অথচ সে জানে ঐ ব্যক্তি তার পিতা নয়, তার জন্য জান্নাত হারাম।”
হাদীসে একই বিষয়বস্তু সম্বলিত অন্যান্য রেওয়াতও পাওয়া যায়। সেগুলো এ কাজটিকে মারাত্মক পর্যায়ের গুনাহ গণ্য করা হয়েছে।
৯
অর্থাৎ এ অবস্থাতেও খামাখা কোন ব্যক্তির সাথে তার পিতৃ-সম্পর্ক জুড়ে দেয়া ঠিক হবে না।
১০
এর অর্থ হচ্ছে, কাউকে সস্নেহে পুত্র বলে ফেললে এতে কোন গুনাহ হবে না। অনুরূপভাবে মা, মেয়ে, বোন, ভাই ইত্যাদি শব্দাবলীও যদি কারো জন্য নিছক ভদ্রতার খাতিরে ব্যবহার করা হয় তাহলে তাতে কোন গুনাহ হবে না। কিন্তু যদি এরূপ নিয়ত সহকারে একথা বলা হয় যে, যাকে পুত্র ইত্যাদি বলা হবে তাকে যথার্থই এ সম্পর্কগুলোর যে প্রকৃত সেই মর্যাদায় অভিসিক্ত করতে হবে, এ ধরনের আত্মীয়দের যে অধিকার স্বীকৃত তা দান করতে হবে এবং তার সাথে ঠিক তেমনি সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে যেমন সেই পর্যায়ের আত্মীয়দের সাথে করা হয়ে থাকে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই এটি হবে আপত্তিকর এবং এজন্য পাকড়াও করা হবে।
১১
এর একটি অর্থ হচ্ছে, ইতিপূর্বে এ ব্যাপারে যেসব ভুল করা হয়েছে আল্লাহ সেগুলো মাফ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তাদেরকে আর কোন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, না জেনে কোন কাজ করার জন্য আল্লাহ পকড়াও করবেন না। যদি বিনা ইচ্ছায় এমন কোন কাজ করা হয় যার বাইরের চেহারা কোন নিষিদ্ধ কাজের মতো কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেখানে সেই নিষিদ্ধ কাজটি করার ইচ্ছা ছিল না। তাহলে নিছক কাজটির বাইরের কাঠামোর ভিত্তিতে আল্লাহ শাস্তি দেবেন না।