নবুওয়াত যুগের নিকটবর্তী কালের প্রধান মুফাসসিরগণ এর এ অর্থই বর্ণনা করেন। ইবনে জারীর ও ইবনুল মুনযিরের বর্ণনা মতে মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন (রা.) হযরত উবাইদাতুস সালমানীর কাছে এ আয়াতটির অর্থ জিজ্ঞেস করেন। (এই হযরত উবাইদাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে মুসলমান হন কিন্তু তাঁর খিদমতে হাযির হতে পারেননি। হযরত উমরের (রা.) আমলে তিনি মদীনা আসেন এবং সেখানেই থেকে যান। তাঁকে ফিকহ ও বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে কাযী শুরাইহ-এর সমকক্ষ মনে করা হতো।) তিনি জবাবে কিছু বলার পরিবর্তে নিজের চাদর তুলে নেন এবং তা দিয়ে এমনভাবে মাথা ও শরীর ঢেকে নেন যে তার ফলে পুরো মাথা ও কপাল এবং পুরো চেহারা ঢাকা পড়ে যায়, কেবলমাত্র একটি চোখ খোলা থাকে। ইবনে আব্বাসও প্রায় এই একই ব্যাখ্যা করেন। তাঁর যেসব উক্তি ইবনে জারীর, ইবনে আবি হাতেম ও ইবনে মারদুইয়া উদ্ধৃত করেছেন তা থেকে তাঁর যে বক্তব্য পাওয়া যায় তা হচ্ছে এই যে, “আল্লাহ মহিলাদেরকে হুকুম দিয়েছেন যে, যখন তারা কোন কাজে ঘরের বাইরে বের হবে তখন নিজেদের চাদরের পাল্লা ওপর দিয়ে লটকে দিয়ে যেন নিজেদের মুখ ঢেকে নেয় এবং শুধুমাত্র চোখ খোলা রাখে।” কাতাদাহ ও সুদ্দীও এ আয়াতের এ ব্যাখ্যাই করেছেন।
সাহাবা ও তাবে’ঈদের যুগের পর ইসলামের ইতিহাসে যত বড় বড় মুফাসসির অতিক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা সবাই একযোগে এ আয়াতের এ অর্থই বর্ণনা করেছেন। ইমাম ইবনে জারীর তাবারী বলেনঃ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ অর্থাৎ ভদ্র ঘরের মেয়েরা যেন নিজেদের পোশাক আশাকে বাঁদীদের মতো সেজে ঘর থেকে বের না হয়। তাদের চেহারা ও কেশদাম যেন খোলা না থাকে। বরং তাদের নিজেদের ওপর চাদরের একটি অংশ লটকে দেয়া উচিত। ফলে কোন ফাসেক তাদেরকে উত্যক্ত করার দুঃসাহস করবে না। (জামেউল বায়ান ২২ খন্ড, ৩৩ পৃষ্ঠা)।
আল্লামা আবু বকর জাসসাস বলেন, “এ আয়াতটি প্রমাণ করে, যবুতী মেয়েদের চেহারা অপরিচিত পুরুষদের থেকে লুকিয়ে রাখার হুকুম দেয়া হয়েছে। এই সাথে ঘর থেকে বের হবার সময় তাদের সতর ও পবিত্রতা সম্পন্না হবার কথা প্রকাশ করা উচিত। এর ফলে সন্দেহযুক্ত চরিত্র ও কর্মের অধিকারী লোকেরা তাদেরকে দেখে কোন প্রকার লোভ ও লালসার শিকার হবে না।” (আহকামুল কুরআন, ৩ খন্ড, ৪৫৮ পৃষ্ঠা)
আল্লামা যামাখশারী বলেন, يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ অর্থাৎ তারা যেন নিজেদের চাদরের একটি অংশ লটকে নেয় এবং তার সাহায্যে নিজেদের চেহারা ও প্রান্তভাগগুলো ভালোভাবে ঢেকে নেয়।” (আল কাশশাফ, ২ খন্ড, ২২ পৃষ্ঠা)
আল্লামা নিযামুদ্দীন নিশাপুরী বলেন, يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ অর্থাৎ নিজেদের ওপর চাদরের একটি অংশ লটকে দেয়। এভাবে মেয়েদেরকে মাথা ও চেহারা ঢাকার হুকুম দেয়া হয়েছে। (গারায়েবুল কুরআন ২২, খন্ড ৩২ পৃষ্ঠা)
ইমাম রাযী বলেনঃ “এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, লোকেরা যেন জানতে পারে এরা দুশ্চরিত্রা মেয়ে নয়। কারণ যে মেয়েটি নিজের চেহারা ঢাকবে, অথচ চেহারা সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়, তার কাছে কেউ আশা করতে পারে না যে, সে নিজের ‘সতর’ অন্যের সামনে খুলতে রাজী হবে। এভাবে প্রত্যেক ব্যক্তি জানবে, এ মেয়েটি পর্দানশীল, একে যিনার কাজে লিপ্ত করার আশা করা যেতে পারে না।” (তাফসীরে কবীর, ২ খন্ড, ৫৯১ পৃষ্ঠা)
এ আয়াত থেকে পরোক্ষভাবে আর একটি বিষয়ের সন্ধান পাওয়া যায়। অর্থাৎ এখান থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কয়েকটি কন্যা থাকার কথা প্রমাণিত হয়। কারণ, আল্লাহ বলছেন, “হে নবী! তোমার স্ত্রীদের ও কন্যাদেরকে বলো।” এ শব্দাবলী এমনসব লোকদের উক্তি চূড়ান্তভাবে খন্ডন করে যারা আল্লাহর ভয়শূন্য হয়ে নিসংকোচে এ দাবী করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কেবলমাত্র একটি কন্যা ছিল এবং তিনি ছিলেন, হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা। বাদবাকি অন্য কন্যারা তাঁর ঔরসজাত ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন তাঁর স্ত্রীর পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত এবং তাঁর কাছে প্রতিপালিত। এ লোকেরা বিদ্বেষে অন্ধ হয়ে একথাও চিন্তা করেন না যে, নবী সন্তানদেরকে তাঁর ঔরসজাত হবার ব্যাপারটি অস্বীকার করে তারা কতবড় অপরাধ করছেন এবং আখেরাতে এজন্য তাদেরকে কেমন কঠিন জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে। সমস্ত নির্ভরযোগ্য হাদীস এ ব্যাপারে ঐকমত্য ব্যক্ত করেছে যে, হযরত খাদীজার (রা.) গর্ভে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কেবলমাত্র একটি সন্তান হযরত ফাতেমা (রা.) জন্ম গ্রহণ করেননি বরং আরো তিন কন্যাও জন্মলাভ করে। নবী করীমের ﷺ সবচেয়ে প্রাচীন সীরাত লেখক মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক হযরত খাদীজার সাথে নবী করীমের ﷺ বিয়ের ঘটনা উল্লেখ করার পর বলেনঃ “ইবরাহীম ছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সমস্ত ছেলে মেয়ে তাঁরই গর্ভে জন্ম নেয়। তাদের নাম হচ্ছেঃ কামেস, তাহের ও তাইয়েব এবং যয়নব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম ও ফাতেমা। (সীরাতে ইবনে হিশাম, ১ খন্ড, ২০২ পৃষ্ঠা) প্রখ্যাত বংশতালিকা বিশেষজ্ঞ হিশাম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনুস সায়েব কালবির বর্ণনা হচ্ছেঃ “নবুওয়াত লাভের পূর্বে মক্কায় জন্ম গ্রহণকারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রথম সন্তান হলো কাসেম। তারপর জন্ম লাভ করে যয়নব, তারপর রুকাইয়া, তারপর উম্মে কুলসুম।” (তাবকাতে ইবনে সা’দ, ১খন্ড, ১৩৩ পৃষ্ঠা) ইবনে হাযম জাওয়ামেউস সিয়ারে লিখেছেন, হযরত খাদীজার (রা.) গর্ভে নবী করীমের ﷺ চারটি কন্যা জন্ম গ্রহণ করেন। এদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন হযরত যয়নব (রা.), তাঁর ছোট ছিলেন হযরত রুকাইয়া (রা.), তাঁর ছোট ছিলেন হযরত ফাতেমা (রা.) এবং তাঁর ছোট ছিলেন উম্মে কুলসুম (রা.) (পৃষ্ঠা ৩৮-৩৯) তাবারী, ইবনে সা’দ আল মুহাব্বার গ্রন্থ প্রণেতা আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবনে হাবীব এবং আল ইসতি’আব গ্রন্থ প্রণেতা ইবনে আবদুল বার নির্ভরযোগ্য বরাতের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্বে হযরত খাদীজার (রা.) আরো দু’জন স্বামী অতিক্রান্ত হয়েছিল। একজন ছিলেন আবু হালাহ তামিমী, তাঁর ঔরসে জন্ম নেয় হিন্দ ইবনে আবু হালাহ। দ্বিতীয় জন ছিলেন আতীক ইবনে আয়েদ মাখযূমী। তাঁর ঔরসে হিন্দ নামে এক মেয়ের জন্ম হয়। তারপর তাঁর বিয়ে হয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে। সকল বংশ তালিকা বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে একমত যে তাঁর ঔরসে হযরত খাদীজার (রা.) গর্ভে ওপরে উল্লেখিত চার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। (দেখুন তাবারী, ২ খন্ড, ৪১১ পৃষ্ঠা তাবকাত ইবনে সা’দ, ৮ খন্ড, ১৪-১৬ পৃষ্ঠা, কিতাবুল মুহাব্বার, ৭৮, ৭৯ ও ৪৫২ পৃষ্ঠা এবং আল ইসতি’আব, ২খন্ড, ৭১৮ পৃষ্ঠা।) এ সমস্ত বর্ণনা নবী করীমের ﷺ একটি নয় বরং কয়েকটি মেয়ে ছিল, কুরআন মজীদের এ বর্ণনাকে অকাট্য প্রমাণ করে।
এখানে কিছুক্ষণ থেমে একবার একথাটি অনুবাধন করার চেষ্টা করুন যে, কুরআনের এ হুকুম এবং এ হুকুমের যে উদ্দেশ্য আল্লাহ নিজেই বর্ণনা করেছেন তা ইসলামী সমাজ বিধানের কোন্ ধরনের প্রাণ শত্তির প্রকাশ ঘটাচ্ছে। ইতিপূর্বে সূরা নূরের ৩১ আয়াতে এ নির্দেশ আলোচিত হয়েছে যে, মহিলারা তাদের সাজসজ্জা অমুক অমুক ধরনের পুরুষ ও নারীদের ছাড়া আর কারো সামনে প্রকাশ করবে না। “আর মাটির ওপর পা দাপিয়ে চলবে না, যাতে যে সৌন্দর্য তারা লুকিয়ে রেখেছে লোকেরা যেন তা জেনে না ফেলে।” এ হুকুমের সাথে যদি সূরা আহযাবের এ আয়াতটি মিলিয়ে পড়া হয় তাহলে পরিষ্কার জানা যায় যে, এখানে চাদর দিয়ে ঢাকার যে হুকুম এসেছে অপরিচিতদের থেকে সৌন্দর্য লুকানোই হচ্ছে তার উদ্দেশ্য। আর একথা সুস্পষ্ট যে, এ উদ্দেশ্য তখনই পূর্ণ হতে পারে যখন চাদরটি হবে সাদামাটা। নয়তো একটি উন্নত নকশাদার ও দৃষ্টিনন্দন কাপড় জড়িয়ে নিলে তো উল্টো এ উদ্দেশ্য আরো খতম হয়ে যাবে। তাছাড়া আল্লাহ কেবল চাদর জড়িয়ে সৌন্দর্য ঢেকে রাখার হুকুম দিচ্ছেন না বরং একথাও বলছেন যে, মহিলারা যেন চাদরের একটি অংশ নিজেদের ওপর লটকে দেয়। কোন বিচক্ষণ বিবেকবান ব্যক্তি এ উক্তিটির এছাড়া দ্বিতীয় কোন অর্থ করতে পারেন না যে, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ঘোমটা দেয়া যাতে শরীর ও পোশাকের সৌন্দর্য ঢাকার সাথে সাথে চেহারাও ঢাকা পড়বে। তারপর আল্লাহ নিজেই এ হুকুমটির ‘ইল্লাত’ (কার্যকারণ) এ বর্ণনা করেছেন যে, এটি এমন একটি সর্বাধিক উপযোগী পদ্ধতি যা থেকে মুসলমান মহিলাদেরকে চিনে নেয়া যাবে এবং তারা উত্যক্ত হবার হাত থেকেও বেঁচে যাবে। এ থেকে আপনা-আপনিই একথা প্রকাশ হয়ে যায় যে, এ নিদের্শ এমন সব মহিলাকে দেয়া হচ্ছে যারা পুরুষদের হাতে উত্যক্ত হবার এবং তাদের দৃষ্টিতে পড়ার ও তাদের কামনা-লালসার বস্তুতে পরিণত হবার ফলে আনন্দ অনুভব করার পরিবর্তে একে নিজেদের জন্য কষ্টদায়ক লাঞ্ছনাকর মনে করে, যারা সমাজে নিজেদেরকে বে-আবরু মক্ষিরাণী ধরনের মহিলাদের মধ্যে গণ্য করাতে চায় না। বরং সতী-সাধ্বী গৃহ প্রদীপ হিসেবে পরিচিত হতে চায়। এ ধরনের শরীফ ও পূত চরিত্রের অধিকারিনী সৎকর্মশীলা মহিলাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, যদি সত্যিই তোমরা এভাবে নিজেদেরকে পরিচিত করাতে চাও এবং পুরুষদের যৌন লালসার দৃষ্টি সত্যিই তোমাদের জন্য আনন্দাদায়ক না হয়ে কষ্টকর হয়ে থাকে, তাহলে এজন্য তোমরা খুব ভালোভাবে সাজসজ্জা করে বাসর রাতের কনে সেজে ঘর থেকে বের হয়ো না এবং দর্শকদের লালসার দৃষ্টির সামনে নিজেদের সৌন্দর্যকে উজ্জল করে তুলে ধরো না। কেননা এটা এর উপযোগী পদ্ধতি নয়। বরং এজন্য সর্বাধিক উপযোগী পদ্ধতি এই হতে পারে যে, তোমরা একটি সাদামাটা চাদরে নিজেদের সমস্ত সৌন্দর্য ও সাজসজ্জা ঢেকে বের হবে, চেহারা ঘোমটার আড়ালে রাখবে এবং এমনভাবে চলবে যাতে অলংকারের রিনিঝিনি আওয়াজ লোকদেরকে তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে না। বাইরে বের হবার আগে যেসব মেয়ে সাজগোজ করে নিজেদেরকে তৈরী করে এবং ততক্ষণ ঘরের বাইরে পা রাখে না যতক্ষন অপরূপ সাজে নিজেদেরকে সজ্জিতা না করে নেয়, তাদের এর উদ্দেশ্য এছাড়া আর কি হতে পারে যে, তারা সারা দুনিয়ার পুরুষদের জন্য নিজেদেরকে দৃষ্টিনন্দন করতে চায় এবং তাদেরকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করতে চায়। এরপর যদি তারা বলে, দর্শকদের ভ্রূভংগী তাদেরকে কষ্ট দেয়, এরপর যদি তাদের দাবী হয় তারা “সমাজের মক্ষিরানী” এবং “সর্বজনপ্রিয় মহিলা” হিসেবে নিজেদেরকে চিত্রিত করতে চায় না বরং পূত-পবিত্রা গৃহিনী হয়েই থাকতে চায়, তাহলে এটা একটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। মানুষের কথা তার নিয়ত নির্ধারণ করে না বরং কাজেই তার আসল নিয়ত প্রকাশ করে। কাজেই যে নারী আকর্ষণীয়া হয়ে পর পুরুষের সামনে যায়, তার এ কাজটির পেছনে কোন্ ধরনের উদ্দেশ্য কাজ করছে সেটা ঐ কাজ দ্বারাই প্রকাশ পায়। কাজেই এসব মহিলাদের থেকে যা আশা করা যেতে পারে ফিতনাবাজ লোকেরা তাদের থেকে তাই আশা করে থাকে। কুরআন মহিলাদেরকে বলে, তোমরা একই সঙ্গে “গৃহপ্রদীপ” ও “সমাজের মক্ষিরাণী” হতে পারো না। গৃহপ্রদীপ হতে চাইলে সমাজের মক্ষিরাণী হবার জন্য যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় তা পরিহার করো এবং এমন জীবনধারা অবলম্বন করো যা গৃহপ্রদীপ হতে সাহায্য করতে পারে। কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত মত কুরআনের অনুকূল হোক বা তার প্রতিকূল এবং তিনি কুরআনের পথনিদের্শককে নিজের কর্মনীতি হিসেবে গ্রহণ করতে চান বা না চান, মোটকথা তিনি যদি ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে জাল-জুয়াচুরির পথ অবলম্বন করতে না চান, তাহলে কুরআনের অর্থ বুঝতে তিনি ভুল করতে পারেন না। তিনি যদি মুনাফিক না হয়ে থাকেন, তাহলে পরিষ্কারভাবে একথা মেনে নেবেন যে, ওপরে যা বর্ণনা করা হয়েছে তাই হচ্ছে কুরআনের উদ্দেশ্য। এরপর তিনি যে বিরুদ্ধাচরণই করবেন একথা মেনে নিয়েই করবেন যে, তিনি কুরআন বিরোধী কাজ করছেন অথবা কুরআনের নিদের্শনাকে ভুল মনে করছেন।