قَالُوا۟ سُبْحَـٰنَكَ أَنتَ وَلِيُّنَا مِن دُونِهِم ۖ بَلْ كَانُوا۟ يَعْبُدُونَ ٱلْجِنَّ ۖ أَكْثَرُهُم بِهِم مُّؤْمِنُونَ
তখন তারা জবাব দেবে, “পাক-পবিত্র আপনার সত্তা, আমাদের সম্পর্ক তো আপনার সাথে, এদের সাথে নয়। ৬২ আসলে এরা আমাদের নয় বরং জিনদের পূজা করত এদের অধিকাংশ তাদেরই প্রতি ঈমান এনেছিল।” ৬৩
৬২
অর্থাৎ তারা জবাব দেবে, অন্য কেউ খোদায়ী ও উপাস্য হবার ব্যাপারে আপনার সাথে শরীক হবে আপনার সত্তা এ থেকে পাক-পবিত্র এবং এর অনেক অনেক ঊর্ধ্বে। এ লোকগুলোর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। এদের এবং এদের কাজ-কারবারের কোন দায়-দায়িত্ব আমাদের ওপর নেই। আমরা তো আপনার বান্দা।
৬৩
এ বাক্যাংশে জিন বলতে জিনদের মধ্যকার শয়তানদের কথা বুঝানো হয়েছে। ফেরেশতাদের এ জবাবের অর্থ হচ্ছে, বাহ্যত এরা আমাদের নাম নিয়ে এবং নিজেদের ধারণা অনুযায়ী আমাদের মূর্তি বানিয়ে যেন আমাদেরই ইবাদাত করতো কিন্তু আসলে আমাদের নয় বরং এরা ইবাদাত করতো শয়তানের। কারণ শয়তানরাই তাদেরকে এ পথ দেখিয়েছিল। আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে প্রয়োজন পূর্ণকারী মনে করার এবং তাদের সামনে নজরানা পেশ করার জন্য শয়তানরাই তাদেরকে উদ্ধুদ্ধ করেছি।
যারা জিনদেরকে পার্বত্য এলাকার অধিবাসী এবং গ্রামীন ও মরু এলাকার মানুষ অর্থে গ্রহণ করেন এ আয়াতটি সুস্পষ্টভাবে তাদের সে চিন্তা ভুল বলে প্রমাণিত করে। কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি কি এ আয়াতটি পড়ে এরূপ ভাবতে পারে যে, লোকেরা পাহাড়ী, মরুচারী ও গ্রীমান লোকদের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং তাদের ইবাদাত করতো?
এ আয়াত থেকে ইবাদাতের অন্য একটি অর্থের ওপরও আলোকপাত করা হয়। এ থেকে জানা যায় যে, ইবাদাত কেবল উপাসনা, আরাধনা ও পূজা-অর্চনারই নাম নয়। বরং কারো নিদের্শে চলা এবং চোখ-কান বন্ধ করে তার আনুগত্য করাও ইবাদাত। এমনকি মানুষ যদি কাউকে অভিশাপ দেয় (যেমন শয়তানদেরকে অভিশাপ দেয়) এবং তারপরও তারই পথ অনুসরণ করে চলে তাহলেও সে তারই ইবাদাত করছে। এর অন্য দৃষ্টান্তগুলোর জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আন নিসা, ১৪৫; আল মা-য়েদাহ, ৯১; আত্ তাওবা, ৩১; মারয়াম, ২৭ এবং আল কাসাস, ৮৬ টীকা।