مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلْعِزَّةَ فَلِلَّهِ ٱلْعِزَّةُ جَمِيعًا ۚ إِلَيْهِ يَصْعَدُ ٱلْكَلِمُ ٱلطَّيِّبُ وَٱلْعَمَلُ ٱلصَّـٰلِحُ يَرْفَعُهُۥ ۚ وَٱلَّذِينَ يَمْكُرُونَ ٱلسَّيِّـَٔاتِ لَهُمْ عَذَابٌۭ شَدِيدٌۭ ۖ وَمَكْرُ أُو۟لَـٰٓئِكَ هُوَ يَبُورُ
যে সম্মান চায় তার জানা উচিত সমস্ত সম্মান একমাত্র আল্লাহরই। ২০ তাঁর কাছে শুধুমাত্র পবিত্র কথাই ওপরের দিকে আরোহণ করে এবং সৎকাজ তাকে ওপরে ওঠায়। ২১ আর যারা অনর্থক চালবাজী করে ২২ তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি এবং তাদের চালবাজী নিজেই ধ্বংস হবে।
২০
মনে রাখতে হবে, কুরাইশ সরদাররা নবী করীম ﷺ কে মোকাবিলায় যা কিছু করছিল সবই ছিল তাদের নিজেদের ইজ্জত ও মর্যাদার খাতিরে। তাদের ধারণা ছিল, যদি মুহাম্মাদ ﷺ এর কথা গৃহীত হয়ে যায় তাহলে আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব তামাম আরব মুল্লুকে আমাদের যে মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত আছে তা মাটিতে মিশে যাবে। এরই প্রেক্ষিতে বলা হচ্ছে, আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও কুফরী করে তোমরা নিজেদের যে মর্যাদা তৈরি করে রেখেছো এ তো একটি মিথ্যা ও ঠুনকো মর্যাদা। মাটিতে মিশে যাওয়াই এর ভাগ্যের লিখন। আসল ও চিরস্থায়ী মর্যাদা, দুনিয়া থেকে নিয়ে আখেরাত পর্যন্ত যা কখনো হীনতা ও লাঞ্ছনার শিকার হতে পারে না, তা বেবলমাত্র আল্লাহর বন্দেগীর মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। তুমি যদি তাঁর হয়ে যাও, তাহলে তাঁকে পেয়ে যাবে এবং যদি তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরয়ে নাও, তাহলে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হবে।
২১
এ হচ্ছে মর্যাদা লাভ করার আসল উপায়। আল্লাহর কাছে মিথ্যা, কলুষিত ও ক্ষতিকারক কথা কখনো উচ্চ মর্যাদা লাভ করে না। তাঁর কাছে একমাত্র এমন কথা উচ্চ মর্যাদা লাভ করে যা হয় সত্য, পবিত্র-পরিচ্ছন্ন, বাস্তব ভিত্তিক, যার মধ্যে সদিচ্ছা সহকারে একটি ন্যয়নিষ্ঠ আকিদা-বিশ্বাস ও একটি সঠিক চিন্তাধারার প্রতিনিধিত্ব করা হয়েছে। তারপর একটি পবিত্র কথাকে যে জিনিসটি উচ্চ মর্যাদার দিকে নিয়ে যায় সেটি হচ্ছে কথা অনুযায়ী কাজ। যেখানে কথা খুবই পবিত্র কিন্তু কাজ তার বিপরীত সেখানে কথার পবিত্রতা নিস্তেজ ও শক্তিহীন হয়ে পড়ে। কেবলমাত্র মুখে কথার খই ফুটালে কোন কথা উচ্চ মর্যাদায় উন্নীত হয় না বরং এজন্য সৎকাজের শক্তিমত্তার প্রয়োজন হয়।
এখানে একথাও অনুধাবন করতে হবে যে, কুরআন মজীদ ভালো কথা ও ভালো কাজকে পরস্পরের অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য বিষয় হিসেবে পেশ করে। কোন কাজ নিছক ভালো হতে পারে না যতক্ষন না তার পেছনে থাকে ভালো আকীদা-বিশ্বাস। আর কোন ভালো আকীদা-বিশ্বাস এমন অবস্থায় মোটেই নির্ভরযোগ্য হতে পারে না যতক্ষন না মানুষের কাজ তার প্রতি সমর্থন যোগায় এবং তার সত্যতা প্রমাণ করে। কোন ব্যক্তি যদি মুখে বলতে থাকে, আমি এক ও লা-শরীক আল্লাহকে মাবুদ বলে মানি কিন্তু কার্যত সে গাইরুল্লাহর ইবাদাত করে, তাহলে এ কাজ তার কথাকে মিথ্যা প্রমাণিত করে। কোন ব্যক্তি যদি মুখে মদ হারাম বলতে থাকে এবং কার্যত মদ পান করে চলে, তাহলে শুধুমাত্র তার কথা মানুষের দৃষ্টিতেও গৃহীত হতে পারে না, আর আল্লাহর কাছেও তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
২২
অর্থাৎ বাতিল ও ক্ষতিকর কথা নিয়ে এগিয়ে আসে তারপর শঠতা, প্রতারণা ও মনোমুদ্ধকর যুক্তির মাধ্যমে তাকে সামনের দিকে এগিয়ে দেবার চেষ্টা করে এবং তার মোকাবেলায় সত্য ও হক কথাকে ব্যর্থ করার জন্য সবচেয়ে খারাপ ব্যবস্থা আবলম্বন করতেও পিছপা হয় না।