رَّبُّ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ ٱلْمَشَـٰرِقِ
যিনি পৃথিবী ও আকাশমণ্ডলীর এবং পৃথিবী ও আকাশের মধ্যে যা কিছু আছে তাদের সবার মালিক এবং সমস্ত উদয়স্থলের ৩ মালিক। ৪
৩
সূর্য সবসময় একই উদয়স্থল থেকে উদিত হয় না। বরং প্রতিদিন একটি নতুন স্থান থেকে উদিত হয়। তাছাড়া সারা দুনিয়ায় সে একই সময় উদিত হয় না বরং দুনিয়ায় বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন সময় উদিত হয়। এসব কারণে উদয়স্থলের পরিবর্তে “সমস্ত উদয়স্থল” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং এ সঙ্গে “সমস্ত অস্তস্থল”--এর কথা না বলার কারণ হচ্ছে এই যে, সমস্ত উদয়স্থল শব্দেই অস্তস্থল প্রমাণ করে। তবুও এক জায়গায় رَبِّ الْمَشَارِقِ وَالْمَغَارِبِ (উদয়স্থলগুলো ও অস্তস্থলগুলোর রব) শব্দগুলোও এসেছে। (আল মা’আরিজ, ৪০)
৪
এ আয়তগুলোতে যে সত্যটি বুঝানো হয়েছে সেটি হচ্ছে এই যে, বিশ্ব-জাহানের আসল মালিক ও শাসনকর্তাই মানুষের আসল মা’বুদ। তিনিই প্রকৃতপক্ষে মা’বুদ হতে পারেন এবং তাঁরই মাবুদ হওয়া উচিত। রব (মালিক, শাসনকর্তা ও প্রতিপালক) হবে একজন এবং ইলাহ (ইবাদাত লাভের অধিকারী) হবে অন্যজন, এটা একেবারেই বুদ্ধি বিরোধী কথা। মানুষের লাভ ও ক্ষতি, তার অভাব ও প্রয়োজন পূর্ণ হওয়া, তার ভাগ্য ভাঙা-গড়া বরং তার নিজের অস্তিত্ব ও স্থায়িত্বই যার ক্ষমতার অধীনে তাঁর শ্রেষ্টত্ব ও প্রাধান্য স্বীকার করা এবং তাঁর সমানে নত হওয়া মানুষের প্রকৃতিরই দাবী। এটিই তাঁর ইবাদাতের মৌল কারণ। মানুষ যখন একথাটি বুঝতে পারে তখন আপনা আপনি সে একথটিও বুঝতে পারে যে, ক্ষামতার অধিকারীর ইবাদাত না করা এবং ক্ষমতাহীনের ইবাদাত করা দু’টোই বুদ্ধি ও প্রকৃতির সুস্পষ্ট বিরোধী। কর্তৃত্বশালী ইবাদাত লাভের হকদার হন। কর্তৃত্বহীন সত্তারা এর হকদারও হয় না। তাদের ইবাদাত করে এবং তাদের কাছে কিছু চেয়ে কোন লাভও হয় না। কারণ আমাদের কোন আবেদনের ভিত্তিতে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কোন ক্ষমতাই তাদের নেই। তাদের সামনে বিনয়, দীনতা ও কৃতজ্ঞতা সহকারে মাথা নত করা এবং তাদের কাছে প্রার্থনা করা ঠিক তেমনিই নির্বুদ্ধিতার কাজ যেমন কোন ব্যক্তি কোন শাসনকর্তার সামনে হাজির হয়ে তার কাছে আর্জি পেশ করার পরিবর্তে অন্য প্রার্থীরা যারা সেখানে আবেদনপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তাদের মধ্য থেকে কারো হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে থাকে।