مِّنَ ٱلَّذِينَ هَادُوا۟ يُحَرِّفُونَ ٱلْكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَيَقُولُونَ سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا وَٱسْمَعْ غَيْرَ مُسْمَعٍۢ وَرَٰعِنَا لَيًّۢا بِأَلْسِنَتِهِمْ وَطَعْنًۭا فِى ٱلدِّينِ ۚ وَلَوْ أَنَّهُمْ قَالُوا۟ سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَٱسْمَعْ وَٱنظُرْنَا لَكَانَ خَيْرًۭا لَّهُمْ وَأَقْوَمَ وَلَـٰكِن لَّعَنَهُمُ ٱللَّهُ بِكُفْرِهِمْ فَلَا يُؤْمِنُونَ إِلَّا قَلِيلًۭا
যারা ইহুদী হয়ে গেছে, ৭২ তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা শব্দকে তার স্থান থেকে ফিরিয়ে দেয় ৭৩ এবং সত্য দ্বীনের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রকাশের জন্য নিজেদের জিহ্বা কুঞ্চিত করে বলে, “আমরা শুনলাম” এবং “আমরা অমান্য করলাম” ৭৪ আর “শোনে না শোনার মতো” ৭৫ এবং বলে “রাঈনা।” ৭৬ অথচ তারা যদি বলতো, “আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম” এবং “শোন” ও “আমাদের প্রতি লক্ষ্য করো” তাহলে এটা তাদেরই জন্য ভালো হতো এবং এটাই হতো অধিকতর সততার পরিচায়ক। কিন্তু তাদের বাতিল পরস্তির কারণে তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ পড়েছে। তাই তারা খুব কমই ঈমান এনে থাকে।
৭২
‘যারা ইহুদী’ না বলে বলেছেন, ‘যারা ইহুদী হয়ে গেছে’। এর কারণ প্রথম তারাও মুসলমানই ছিল, যেমন প্রত্যেক নবীর উম্মাত আসলে মুসলমান হয়। কিন্তু পরে তারা কেবলমাত্র ইহুদী হয়েই রয়ে গেছে।
৭৩
এর তিনটি অর্থ হয়। এক, তারা আল্লাহর কিতাবের শব্দের মধ্যে হেরফের করে দেয়। দুই, তারা নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যার সাহায্যে কিতাবের আয়াতের অর্থের মধ্যে বিরাট পরিবর্তন আনে। তিন, তারা মুহাম্মাদ ﷺ ও তাঁর অনুসারীদের সাহচর্যে এসে তাদের কথা শোনে এবং সেখান থেকে ফিরে গিয়ে লোকদের সামনে তাঁদের সম্পর্কে বানোয়াট কথা বলে। একটি কথা একভাবে বলা হয় এবং তারা নিজেদের শয়তানী মনোবৃত্তি ও দুষ্টবুদ্ধির দ্বারা পরিচালিত হয়ে তাকে ভিন্নরূপ দিয়ে লোকদের সামনে এনে হাজির করে। এভাবে তারা নবী ও তাঁর অনুসারীদের দুর্নাম করে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে ইসলামী দাওয়াত থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চেয়েছে।
৭৪
অর্থাৎ তাদেরকে আল্লাহর বিধান শুনানো হলে তারা উচ্চস্বরে বলে ওঠে, “সামে’না” (আমরা শুনেছি) এবং নীচু স্বরে বলে, “আসাইনা” (আমরা অমান্য করলাম)। অথবা তারা “আতা’য়না” (আমরা আনুগত্য করলাম) শব্দটি এমনভাবে নিজেদের কণ্ঠ বাঁকিয়ে ওলটপালট করে উচ্চারণ করে যার ফলে তা “আসাইনা” (আমরা অমান্য করলাম) হয়ে যায়।
৭৫
অর্থাৎ কথাবার্তার মাঝখানে যখন তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কোন কথা বলতে চায় তখন বলে, “ইস্মা” (শুনুন)। আবার সাথে সাথেই বলে ওঠে, “গাইরা মুসমাঈন।” এই “গাইরা মুসমাঈন” শব্দের দুই অর্থ হতে পারে। এর একটি অর্থ হতে পারেঃ আপনি এমনি একজন সম্মানিত বুযর্গ, যাকে তার ইচ্ছা বিরোধী কোন কথা শুনানো যেতে পারে না। এর দ্বিতীয় অর্থ হতে পারেঃ তোমাকে কেউ কিছু শুনাবে এমন যোগ্যতা তোমার নেই। এর আর একটি অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ করুন তুমি যেন বধির হয়ে যাও।
৭৬
এর ব্যাখ্যার জন্য সূরা বাকারার ১০৮ টীকা দেখুন।