تَكَادُ ٱلسَّمَـٰوَٰتُ يَتَفَطَّرْنَ مِن فَوْقِهِنَّ ۚ وَٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ يُسَبِّحُونَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَيَسْتَغْفِرُونَ لِمَن فِى ٱلْأَرْضِ ۗ أَلَآ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
আসমান ওপর থেকে ফেটে পড়ার উপক্রম হয়। ৩ ফেরেশতারা প্রশংসাসহ তাদের রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছে এবং পৃথিবীবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে যায়। ৪ জেনে রাখো, প্রকৃতই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান। ৫
৩
অর্থাৎ কোন সৃষ্টির বংশধারা আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করা এবং তাকে আল্লাহর পুত্র বা কন্যা আখ্যায়িত করা কোন সাধারণ ব্যাপার নয়। কাউকে অভাব পূরণকারী ও বিপদ ত্রাণকারী বানিয়ে নেয়া হয়েছে এবং তার কাছে প্রার্থনা করতে আরম্ভ করেছে। কাউকে সারা দুনিয়ার সাহায্যকারী মনে করে নেয়া হয়েছে এবং প্রকাশ্যে বলতে শুরু করা হয়েছে যে, আমাদের হযরত সব সময় সব স্থানে সবার কথা শোনেন। তিনিই প্রত্যেকের সাহায্যের জন্য হাজির হয়ে তার কাজ উদ্ধার করে দেন। কাউকে আদেশ-নিষেধ এবং হালাল ও হারামের মালিক মোখতার মেনে নেয়া হয়েছে। আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষ এমনভাবে তার নির্দেশের আনুগত্য করতে শুরু করেছে যেন সে-ই তাদের আল্লাহ। এগুলো আল্লাহর বিরুদ্ধে এমন ধৃষ্ঠতা যে এতে আসমান ভেঙে পড়াও অসম্ভব নয়। (সূরা মারয়ামের ৮৮ থেকে ৯১ আয়াতে এই একই বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে)
৪
অর্থাৎ মানুষের এসব কথা শুনে শুনে ফেরেশতারা এই বলে কানে হাত দেয় যে, আমাদের রব সম্পর্কে এসব কি বাজে বলা হচ্ছে এবং পৃথিবীর এই মাখলুক এ কি ধরনের বিদ্রোহ করেছে? তারা বলেঃ সুবহানাল্লাহ! কে এমন মর্যাদার অধিকারী হতে পারে যে, বিশ্ব-জাহানের রবের সাথে ‘উলুহিয়াত’ ও সার্বভৌম ক্ষমতায় শরীক হতে পারে। তিনি ছাড়া আমাদের ও সব বান্দার জন্য আর কে পৃষ্ঠপোষক আছে যে তার প্রশংসা গীত গাইতে হবে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। তাছাড়া তারা উপলব্ধি করে যে, পৃথিবীতে এটা এমন এক মহা অপরাধ করা হচ্ছে যার কারণে যে কোন সময় আল্লাহর গযব নেমে আসতে পারে। তাই তারা পৃথিবীতে বসবাসকারী এই আত্মসংহারী বান্দাদের জন্য বার বার এই বলে দয়া ও করুণার আবেদন জানায় যে, তাদেরকে যেন এখনই শাস্তি দেয়া না হয় এবং সামলে নেয়ার জন্য তাদেরকে আরো কিছুটা সুযোগ দেয়া হয়।
৫
অর্থাৎ এটা তাঁর উদারতা, দয়া ও ক্ষমাশীলতা যার কল্যাণে কুফর, শিরক ও নাস্তিকতা এবং পাপাচার ও চরম জুলুম-নির্যাতনে লিপ্ত ব্যক্তিরাও বছরের পর বছর, এমনকি এ ধরনের পুরো এক একটা সমাজ শত শত বছর পর্যন্ত এক নাগাড়ে অবকাশ পেয়ে থাকে। তারা শুধু রিযিকই লাভ করে না, পৃথিবীতে তাদের খ্যতিও ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া পৃথিবীর এমন সব উপকরণ ও সাজসরঞ্জাম দ্বারা তারা অনুগৃহীত হয় যা দেখে নির্বোধ লোকেরা এই ভ্রান্ত ধারণায় পতিত হয় যে, হয়তো এ পৃথিবীর কোন খোদা-ই নেই।