হযরত আয়েশা বলেন, একবার যায়েদ ইবনে হারেসার ছেলে উসামা ইবনে যায়েদ আঘাত প্রাপ্ত হন এবং রক্ত ঝরাতে থাকে। রসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। তিনি তার রক্ত চুষে থুথু করে ফেলছিলেন এবং তাকে এই বলে সোহাগ করছিলেন যে, উসামা যদি মেয়ে হতো আমি তাকে অলংকার পরাতাম। উসামা যদি মেয়ে হতো আমি তাকে ভালভাল কাপড় পরাতাম।
হযরত আবু মূসা আশআরী বর্ণনা করেছেন, নবী (সা.) বলেছেনঃ
لَيْسَ الْحَرِيرُ وَالذَّهَبُ حَرَامٌ عَلَى ذُكُورِ أُمَّتِى وَحِلال لإِنَاثِهِمْ
“রেশমী কাপড় এবং স্বর্ণের অলংকার পরিধান আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম এবং নারীদের জন্য হালাল।”
হযরত আমর ইবনে আস বর্ণনা করেছেন, একবার দু’জন মহিলা নবীর ﷺ খেদমতে হাজির হলো। তারা স্বর্ণের গহনা পরিহিত ছিল। তিনি তাদের বললেনঃ এর কারণে আল্লাহ তোমাদের আগুনের চুড়ি পরিধান করান তা কি তোমরা চাও? তারা বললো, না। নবী (সা.) বললেন, তাহলে এগুলোর হক আদায় করো অর্থাৎ এর যাকাত দাও।
হযরত আয়শার উক্তি হচ্ছে, যাকাত আদায় করা হলে অলংকার পরিধানে কোন দোষ নেই।
হযরত উমর (রা.) হযরত আবু মূসা আশআরীকে লিখেছিলেন তোমার শাসন কর্তৃত্বাধীন অঞ্চলে যেসব মুসলিম মহিলা আছে তাদেরকে তাদের অলংকারাদির যাকাত দেবার নির্দেশ দাও।
আমর ইবনে দীনারের বরাত দিয়ে ইমাম আবু হানিফা বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আয়েশা তাঁর বোনদের এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) তাঁর মেয়েদেরকে স্বর্ণের অলংকার পরিয়েছিলেন।
এসব বর্ণনা উদ্ধৃত করার পর আল্লামা জাসসাস লিখছেনঃ নারীদের জন্য স্বর্ণ ও রেশম হালাল হওয়ার সপক্ষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যেসব হাদীস আছে সেগুলো নাজায়েয হওয়া সম্পর্কিত হাদীসসমূহ থেকে অধিক মশহুর ও সুস্পষ্ট। উপরোল্লেখিত আয়াতও জায়েয হওয়াই প্রমাণ করছে। তাছাড়া নবী ﷺ এবং সাহাবাদের যুগ থেকে আমাদের যুগ (অর্থাৎ চতুর্দশ শতাব্দীর শেষ যুগ) পর্যন্ত গোটা উম্মতের কার্যধারাও তাই আছে। এ ব্যাপারে কেউ কোন আপত্তি উত্থাপন করেনি। এ ধরনের মাসয়ালা সম্পর্কে “আখবারে আহাদের” ভিত্তিতে কোন আপত্তি গ্রহণ করা যেতে পারে না।