وَكَذَٰلِكَ مَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ فِى قَرْيَةٍۢ مِّن نَّذِيرٍ إِلَّا قَالَ مُتْرَفُوهَآ إِنَّا وَجَدْنَآ ءَابَآءَنَا عَلَىٰٓ أُمَّةٍۢ وَإِنَّا عَلَىٰٓ ءَاثَـٰرِهِم مُّقْتَدُونَ
এভাবে তোমার পূর্বে আমি যে জনপদেই কোন সতর্ককারীকে পাঠিয়েছি, তাদের স্বচ্ছল লোকেরা একথাই বলেছে, আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে একটি পন্থার অনুসরণ করতে দেখেছি। আমরাও তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। ২৩
২৩
এটি অত্যন্ত গভীরভাবে ভেবে দেখার বিষয় যে, প্রত্যেক যুগে জাতির সচ্ছল শ্রেণীর লোকেরাই শুধু নবী-রসূলদের বিরুদ্ধে বাপ-দাদার অন্ধ অনুকরণের ঝাণ্ডাবাহী কেন হয়েছে? ন্যায় ও সত্যের বিরোধিতায় এরাই অগ্রগামী হয়েছে, এরাই প্রতিষ্ঠিত জাহেলিয়াতকে টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টায় তৎপর থেকেছে এবং জনগনকে বিভ্রান্ত ও উত্তেজিত করে নবী-রসূলদের বিরুদ্ধে ফিতনা সৃষ্টি এরাই করে এসেছে এর কারণ কি? এর মূল কারণ ছিল দু’টি। একটি হচ্ছে, সুখী ও সচ্ছল শ্রেণী আপন স্বার্থ উদ্ধার ও তা ভোগ করার নেশায় এমনই ডুবে থাকে যে, তাদের মতে তারা হক ও বাতিলের এই অপ্রাসঙ্গিক বিতর্কে মাথা ঘামানোর জন্য প্রস্তুত থাকে না। তাদের আরাম প্রিয়তা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিলাসিতা দ্বীনের ব্যাপারে তাদেরকে অত্যন্ত নির্লিপ্ত ও নিষ্পৃহ এবং সাথে সাথে কার্যত রক্ষনশীল (Conservative) বানিয়ে দেয় যাতে প্রতিষ্ঠিত যে অবস্থা পূর্ব থেকেই চলে আসছে হক হোক বা বাতিল হোক--- তাই যেন হুবহু প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং কোন নতুন আদর্শ সম্পর্কে চিন্তা করার কষ্ট না করতে হয়। অপরটি হচ্ছে, প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার সাথে তাদের স্বার্থ ওতপ্রোতোভাবে জড়িত থাকে। নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামদের পেশকৃত আদর্শ দেখে প্রথম দৃষ্টিতেই তারা বুঝে নেয় যে, এটা প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের মাতব্বরির পার্টও চুকিয়ে দেবে এবং তাদের হারামখুরী ও হারাম কর্ম করার স্বাধীনতা থাকবে না। (আরো ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, আল আন’আম টীকা ৯১; আল আ’রাফ, টীকা ৪৬, ৫৩, ৫৮, ৭৪, ৮৮, ৯২; হূদ টীকা ৩১, ৩২, ৪১; বনী ইসরাঈল, টীকা ৮১; আল মু’মিনুন, টীকা ২৬, ২৭, ৩৫, ৫৯; সূরা সাবা, আয়াত ৩৪, টীকা ৫৪)।