অতঃপর বলা হয়েছে, ‘আমি একে আরবী ভাষার কুরআন বানিয়েছি যাতে তোমরা তা উপলব্ধি করো। এর দু’টি অর্থ হতে পারে। এক-এ কুরআন অন্য কোন ভাষায় নয়, বরং তোমাদের নিজেদের ভাষায় রচিত হয়েছে। তাই এর যাচাই বাছাই এবং মর্যাদা ও মূল্য নির্ণয় করতে তোমাদের কোন কষ্ট হওয়ার কথা নয়। এটা যদি আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় হতো তাহলে এই বলে তোমরা ওজর পেশ করতে পারতে যে, এটা আল্লাহর বাণী কিনা তা আমরা কিভাবে পরখ করবো। কারণ, এ বাণী বুঝতেই আমরা অক্ষম। কিন্তু আরবী ভাষার এই কুরআন সম্পর্কে তোমরা এ যুক্তি কি করে পেশ করবে? এর প্রতিটি শব্দ তোমাদের কাছে পরিষ্কার। ভাষা ও বিষয়বস্তু উভয় দিক থেকে এর প্রতিটি বাক্য তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট। এটা মুহাম্মাদ ﷺ কিংবা অন্য কোন আরবী ভাষাভাষীর বাণী হতে পারে কিনা তা নিজেরা বিচার করে দেখো। এই বাণীর দ্বিতীয় অর্থটি হচ্ছে, আমি এই কিতাবের ভাষা আরবী রেখেছি এই জন্য যে, আমি আরব জাতিকে সম্বোধন করে কথা বলছি। আর তারা কেবল আরবী ভাষার কুরআনই বুঝতে সক্ষম। আরবী ভাষায় কুরআন নাযিল করার এই সুস্পষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ উপেক্ষা করে শুধু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতৃভাষা আরবী হওয়ার কারণে একে আল্লাহর বাণী না বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী বলে যারা আখ্যায়িত করে তারা বড়ই জুলুম করে। (এই দ্বিতীয় অর্থটি বুঝার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা হা-মীম আস সাজদার ৪৪ আয়াত ৫৪ নং টীকাসহ)।