وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا مُوسَىٰ بِـَٔايَـٰتِنَآ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ وَمَلَإِي۟هِۦ فَقَالَ إِنِّى رَسُولُ رَبِّ ٱلْعَـٰلَمِينَ
আমি ৪১ মূসাকে আমার নিদর্শনসমূহসহ ৪২ ফেরাউন ও তার সভাসদদের কাছে পাঠিয়েছিলাম। সে গিয়ে তাদের বলেছিলোঃ আমি বিশ্ব-জাহানের রবের রসূল।
৪১
এখানে এ ঘটনাটা তিনটি উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়েছে। এক-আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়ে আরববাসীদের বর্তমানে একটি সুযোগ দান করেছেন। যখনই আল্লাহ কোন দেশ ও জাতির কাছে তাঁর নবী পাঠিয়ে তাদের এ ধরনের সুযোগ দান করেন কিন্তু সে জাতি তার মর্যাদা ও মূল্য দেয়া এবং তা থেকে উপকৃত হওয়ার পরিবর্তে ফিরাউন ও তার কওম যেমন নির্বুদ্ধিতার কাজ করেছিলো তেমন কাজ করে বসে। তখন তারা এমন পরিণামের সম্মুখীন হয় যা ইতিহাসে শিক্ষণীয় উদাহরণ হয়ে আছে। দুই-যেভাবে বর্তমানে মক্কার কুরাইশ গোত্রের কাফেররা তাদের নেতাদের তুলনায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নগণ্য ও হেয় মনে করছে ফিরাউনও তার বাদশাহী, জাঁকজমক, প্রতিপত্তি এবং ধন-সম্পদের গর্বে গর্বিত হয়ে মূসা আলাইহিস সালামকে ঠিক তেমনি নগণ্য ও হেয় মনে করেছিলো। কিন্তু মহান আল্লাহর ফায়সালা ছিল ভিন্ন রকম। এবং বাস্তবে হেয় ও নগণ্য কে ছিলো সেই ফায়সালাই শেষ পর্যন্ত তা বুঝিয়ে দিয়েছে। তিন-আল্লাহর নিদর্শনসমুহের সাথে বিদ্রূপ করা এবং তাঁর সতর্ক বাণীসমূহের বিরুদ্ধে শক্তিমত্তা প্রদর্শন করা কোন ছোটখাট ব্যাপার নয়, বরং অত্যন্ত চড়া মূল্য দাবী করার মত ব্যাপার। যারা এর পরিণাম ভোগ করেছে তাদের উদাহরণ থেকে যদি শিক্ষা গ্রহণ না করো তাহলে নিজেও একদিন সেই পরিণাম ভোগ করবে।
৪২
এর অর্থ প্রাথমিক যেসব নিদর্শন নিয়ে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ফেরাউনের দরবারে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ লাঠি ও ‘ইয়াদে বায়দা’ বা আলোকোজ্জ্বল হাত (ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা আল আ’রাফ, টীকা ৮৭ থেকে ৮৯; ত্বাহা, টীকা ১২, ১৩, ২৯, ৩০; আশ শু’আরা, টীকা ২৬-২৯; আন নামল, টীকা ১৬; আল কাসাস, টীকা ৪৪ ও ৪৫)।