بَلْ هُمْ فِى شَكٍّۢ يَلْعَبُونَ
(কিন্তু বাস্তবে এসব লোকের দৃঢ় বিশ্বাস নেই) বরং তারা নিজেদের সন্দেহের মধ্যে পড়ে খেলছে। ১০
১০
এই সংক্ষিপ্ত আয়াতাংশের মধ্যে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্যের প্রতি ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। নাস্তিক হোক বা মুশরিক তাদের জীবনে মাঝে মধ্যে এমন কিছু মুহূর্ত আসে যখন ভেতর থেকে তাদের মন বলে ওঠেঃ তুমি যা বুঝে বসে আছো তার মধ্যে কোথাও না কোথাও অসঙ্গিত বিদ্যমান। নাস্তিক আল্লাহকে অস্বীকার করার ব্যাপারে বাহ্যত যতই কঠোর হোক না কেন, কোন না কোন সময় তাদের মন এ সাক্ষ্য অবশ্যই দেয় যে, মাটির একটি পরমাণু থেকে শুরু করে নীহারিকা পুঞ্জ পর্যন্ত এবং একটি তৃণপত্র থেকে শুরু করে মানুষের সৃষ্টি পর্যন্ত এই বিস্ময়কর জ্ঞানময় ব্যবস্থা কোন মহাজ্ঞানী স্রস্টা ছাড়া অস্তিত্ব লাভ করতে পারে না। অনুরূপ একজন মুশরিক শিরকের যত গভীরেই ডুবে থাক না কেন তার মনও কোন না কোন সময় একথা বলে ওঠে, যাকে আমি উপাস্য বানিয়ে বসে আছি সে আল্লাহ হতে পারে না। মনের এই ভেতরের সাক্ষ্যের ফলশ্রুতিতে না পারে তারা আল্লাহর অস্তিত্ব ও তাঁর তাওহীদের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস অর্জন করতে না পারে নাস্তিকতার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস পোষণ ও তা থেকে মানসিক প্রশান্তি লাভ করতে। ফলে বাহ্যিকভাবে তারা যত কঠোর ও দৃঢ় বিশ্বাসই প্রদর্শন করুক না কেন তাদের জীবনাদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয় সন্দেহের ওপরে। এখন প্রশ্ন হলো, এই সন্দেহ তাদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে না কেন এবং দৃঢ় বিশ্বাস ও সন্তোষজনক ভিত্তি খুজে পাওয়ার জন্য তারা ধীর ঠাণ্ডা মেজাজে প্রকৃত সত্যে অনুসন্ধান করে না কেন? এ জবাব হলো দ্বীন বা জীবনাদর্শের ব্যাপারে তারা যে জিনিসটি থেকে বঞ্চিত হয় সেটি হচ্ছে ধীর ও ঠাণ্ডা মেজাজ। তাদের দৃষ্টিতে মূল গুরুত্ব লাভ করে শুধু পার্থিব স্বার্থ এবং তার ভোগের উপকরণ। এই বস্তুটি অর্জনের চিন্তা তারা তাদের মন-মগজ ও দেহের সমস্ত শক্তি ব্যয় করে ফেলে। এরপর থকে জীবনাদর্শের ব্যাপার। সেটা তাদের জন্য প্রকৃতপক্ষে একটা খেলা, একটা বিনোদন এবং একটা বুদ্ধিবৃত্তিক বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়। তাই তারাএ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে কয়েক মুহূর্তও ব্যয় করতে পারে না। ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি হলে বিনোদন হিসেবে পালন করা হচ্ছে। নিরীশ্বরবাদ ও নাস্তিকতা বিষয়ক বিতর্ক বিনোদনমূলক ভাবে করা হচ্ছে। দুনিয়ার বাস্তবতার মধ্যে কার এত অবসর আছে যে বসে একটু ভেবে দেখবে, আমরা ন্যয় ও সত্যের প্রতি বিমুখ নই তো? আর যদি তা হই তাহলে পরিণামই বা কি?