مِّن وَرَآئِهِمْ جَهَنَّمُ ۖ وَلَا يُغْنِى عَنْهُم مَّا كَسَبُوا۟ شَيْـًۭٔا وَلَا مَا ٱتَّخَذُوا۟ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَوْلِيَآءَ ۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
তাদের সামনে রয়েছে জাহান্নাম। ১১ তারা পৃথিবীতে যা কিছু অর্জন করেছে তার কোন জিনিসই তাদের কাজে আসবে না আবার আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তারা অভিভাবক বানিয়ে রেখেছেন তারাও তাদের জন্য কিছু করতে পারবে না। ১২ তাদের জন্য রয়েছে বড় শাস্তি।
১১
মূল আয়াতে আছেمِنْ وَرَائِهِمْ جَهَنَّمُ
। আরবী ভাষায় وَرَاء শব্দটি এমন প্রতিটি জিনিস বুঝাতে ব্যবহৃত হয় যা সামনে থাক বা পেছনে থাক মানুষের দৃষ্টির আড়ালে থাকে। সুতারাং এর আরেকটি অনুবাদ হতে পারে “তাদের পেছনে রয়েছে জাহান্নাম।” যদি প্রথম অর্থ গ্রহণ করা হয় তাহলে আয়াতের অর্থ হবে, তারা নিশ্চিন্তে দ্বিধাহীন চিত্তে এ পথে ছুটে চলেছে, অথচ সামনেই জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে যাচ্ছে সে অনুভীতি তাদের নেই। দ্বিতীয় অর্থ গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়াতের অর্থ হবে, তারা আখেরাত সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হয়ে নিজেদের এই দুষ্কর্মের মধ্যে ডুবে আছে। কিন্তু জাহান্নাম তাদের অনুসরণ করছে তা তারা জানে না।
১২
এখানে ولى শব্দ দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এক, সেই সব দেব-দেবী এবং জীবিত বা মৃত নেতাদের বুঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে যাদের সম্বন্ধে মুশরিকরা ধরে নিয়েছে, যে ব্যক্তিই তাদের নৈকট্য লাভ করেছে সে পৃথিবীতে যাই করুক না কেন আল্লাহর দরবারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে না। কেননা, তাদের হস্তক্ষেপ তাকে আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করবে। দুই, সেই সব নেতা, আমীর-উমরাহ ও শাসকদের বুঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষ যাদেরকে পথপ্রদর্শক ও অনুসরণীয় বানিয়ে থাকে, অন্ধভাবে তাদের আনুগত্য করে এবং তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য আল্লাহকে অসন্তস্ট করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এ আয়াত এসব লোককে এ মর্মে সাবধান করে যে, এই আচরণ ও ভূমিকার ফলে যখন তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে তখন এই দুই শ্রেণীর নেতাদের কেউই তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে না। (অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন, সূরা আশ শূরার ব্যাখ্যা, টীকা ৬)।