إِنَّ ٱلَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ ٱللَّهَ يَدُ ٱللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ ۚ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَىٰ نَفْسِهِۦ ۖ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِمَا عَـٰهَدَ عَلَيْهُ ٱللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًۭا
হে নবী যারা তোমার হাতে বাইয়াত করছিলো প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কাছেই বাইয়াত করছিলো। ১৭ তাদের হাতের ওপর ছিল আল্লাহর হাত। ১৮ যে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবে তার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার অশুভ পরিণাম তার নিজের ওপরেই বর্তাবে। আর যে আল্লাহর সাথে কৃত এ প্রতিশ্রুতি পালন করবে, ১৯ আল্লাহ অচিরেই তাকে বড় পুরস্কার দান করবেন।
১৭
পবিত্র মক্কা নগরীতে হযরত উসমানের (রা.) শহীদ হয়ে যাওয়ার খবর শুনে রসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবায়ে কিরাম থেকে হুদাইবিয়া নামক স্থানে যে বাইয়াত নিয়েছিলেন সেই বাইয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কিছু সংখ্যক বর্ণনা অনুসারে এ মর্মে বাইয়াত নেয়া হয়েছিলো যে, আমরা যুদ্ধের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবো না। প্রথম মতটি হযরত সালামা ইবনে আকওয়া থেকে বর্ণিত হয়েছে আর দ্বিতীয়টি বর্ণিত হয়েছে ইবনে উমর, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ এবং মা’কাল ইবনে ইয়াসার থেকে। দু’টিরই প্রতিপাদ্য বিষয় এক। সাহাবীগণ এ সংকল্প নিয়ে রসূলুল্লাহর ﷺ হাতে বাইয়াতে গ্রহণ করেছিলেন যে, তারা সবাই এখানে এ মুহূর্তেই কুরাইশদের সাথে বুঝাপড়া করবেন, এমনকি পরিণামে সবাই নিহত হলেও। প্রকৃতই হযরত উসমান শহীদ হয়েছেন না জীবিত আছেন এক্ষেত্রে তা যেহেতু নিশ্চিত জানা ছিল না তাই রসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর পক্ষ থেকে নিজের একহাত অন্য হাতের ওপর রেখে বাইয়াত করলেন। এখানে হযরত উসমান (রা.) এ অসাধারণ মর্যাদা লাভ করলেন যে, নবী (সা.) নিজের পবিত্র হাতকে তাঁর হাতের স্থলাভিষিক্ত করে তাঁকে বাইয়াতে অংশীদার করলেন। হযরত উসমানের ﷺ পক্ষ থেকে নবীর ﷺ নিজের বাইয়াত করার অনিবার্য অর্থ হলো তাঁর প্রতি নবীর ﷺ এ মর্মে আস্থা ছিল যে, তিনি যদি উপস্থিত থাকতেন তাহলে অবশ্যই বাইয়াত করতেন।
১৮
অর্থাৎ সে সময় লোকেরা যে হাতে বাইয়াত করেছিলো তা ব্যক্তি রসূলের হাত ছিল না, আল্লাহর প্রতিনিধির হাত ছিল এবং রসূলের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর সাথে এ বাইয়াত অনুষ্ঠিত হচ্ছিলো।
১৯
এখানে একটি অতি সূক্ষ্ম বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। আরবী ভাষায় সাধারণ নিয়ম অনুসারে এখানে عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّهَ পড়া উচিত ছিল। কিন্তু এ সাধারণ নিয়ম পরিত্যাগ করে এখানে
عَلَيْهُ اللَّهَ পড়া হয়ে থাকে। আল্লামা আলূসী অস্বাভাবিকভাবে এ
اعراب দেয়ার দু’টি কারণ বর্ণনা করেছেন। একটি হচ্ছে, এ বিশেষ ক্ষেত্রে যে মহান সত্তার সাথে চুক্তি সম্পাদন করা হচ্ছিলো তাঁর মর্যাদা ও জাঁকজমক প্রকাশ উদ্দেশ্য। তাই এখানে
عليه এর পরিবর্তে
عليه ই বেশী উপযুক্ত। অপরটি হচ্ছে,
عليه এর হা সর্বনাম প্রকৃতপক্ষে
هو এর স্থলাভিষিক্ত। আর এর মূল
اعراب পেশ; যের নয়। তাই এর মূল
اعراب চুক্তি পূরণের বিষয়ের সাথে অধিক সামঞ্জস্যপূর্ণ।