لَّقَدْ صَدَقَ ٱللَّهُ رَسُولَهُ ٱلرُّءْيَا بِٱلْحَقِّ ۖ لَتَدْخُلُنَّ ٱلْمَسْجِدَ ٱلْحَرَامَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ ءَامِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ ۖ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا۟ فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَٰلِكَ فَتْحًۭا قَرِيبًا
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- যা ছিল সরাসরি হক। ৪৭ ইনশাআল্লাহ ৪৮ তোমরা পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে। ৪৯ নিজেদের মাথা মুণ্ডন করবে, চুল কাটাবে ৫০ এবং তোমাদের কোন ভয় থাকবে না। তোমরা যা জানতে না তিনি তা জানতেন। তাই স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করার পূর্বে তিনি তোমাদেরকে এ আসন্ন বিজয় দান করেছেন।
৪৭
যে প্রশ্নটি মুসলমানদের মনে বারবার খটকা সৃষ্টি করেছিলো এটি তারই জবাব। তারা বলতো, রসূলুল্লাহ ﷺ তো স্বপ্নে দেখেছিলেন যে, তিনি মসজিদে হারামে প্রবেশ করেছেন এবং বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করেছেন। কিন্তু কি হলো, যে, আমরা উমরা আদায় করা ছাড়াই ফিরে যাচ্ছি। এর জবাবে রসূলুল্লাহ ﷺ যদিও বলেছিলেন যে, স্বপ্নে তো এ বছরই উমরা আদায় করার কথা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু না কিছু উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা মুসলমানদের মনের মধ্যে দেখিয়েছিলাম আর তা ছিল পুরোপুরি সত্য এবং নিশ্চিতভাবেই তা পূরণ হবে।
৪৮
এখানে আল্লাহ তা’আলা নিজে তাঁর প্রতিশ্রুতির সাথে ইনশাআল্লাহ কথাটি ব্যবহার করেছেন। এক্ষেত্রে কেউ প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারে যে, আল্লাহ নিজেই যখন এ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তখন তাকে আল্লাহর চাওয়ার সাথে শর্তযুক্ত করার অর্থ কি? এর জবাব হচ্ছে, এখানে যে কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে তার অর্থ এ নয় যে, আল্লাহ যদি না চান তাহলে তিনি এ প্রতিশ্রুতি পালন করবেন না। বরং যে প্রক্ষিতে এ প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে এর সম্পর্ক তার সাথে। মক্কার কাফেররা যে ধারণার বশবর্তী হয়ে মুসলমানদেরকে উমরা থেকে বিরত রাখার জন্য এ খেলা খেলছিলো তা হচ্ছে আমরা যাকে উমরা করতে দিতে চাইবো সে-ই কেবল উমরা করতে পারবে এবং যখন করতে দিব তখনই মাত্র করতে পারবে। এর প্রেক্ষিতে আল্লাহ বলেছেন, এটা তাদের ইচ্ছার ওপর নয়, বরং আমার ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। এ বছর উমরা হতে না পারার কারণ এটা নয় যে, মক্কার কাফেররা তাই চেয়েছিলো। বরং তা হয়েছে এ জন্য যে, আমি তা হতে দিতে চাইনি। আমি যদি চাই তাহলে ভবিষ্যতে এ উমরা হবে, কাফেররা তা হতে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করুক না করুক। সাথে সাথে একথার মধ্যে এ অর্থও প্রচ্ছন্ন আছে যে, মুসলমানরা যে উমরা করবে তাও নিজের ক্ষমতায় করবে না। আমি যেহেতু চাইবো যে তারা উমরা করুক তাই তারা উমরা করবে আমার ইচ্ছা যদি এর পরিপন্থী হয় তাহলে নিজেরাই উমরা আদায় করে ফেলবে এতটা শক্তি-সমর্থ তাদের মধ্যে নেই।
৪৯
পরের বছর ৭ম হিজরীর যুল-কা’দা মাসে এ প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়। ইতিহাসে এ উমরা উমরাতুল কাযা নামে খ্যাত।
৫০
একথা থেকে প্রমাণিত হয় উমরা ও হজ্জ আদায়ের সময় মাথা মুণ্ডন আবশ্যিক নয়, বরং চুল ছেঁটে নেয়াও জায়েয। তবে মাথা মুণ্ডন উত্তম। কারণ, আল্লাহ তা’আলা তা প্রথমে বর্ণনা করেছেন এবং চুল ছাঁটার কথা পরে উল্লেখ করেছেন।